চীনের বাণিজ্য নিয়ে ট্রাম্পের শুল্কনীতির ঝুঁকিকে উড়িয়ে দিচ্ছে চীন।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের কারণে তাদের রপ্তানিতে তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। দেশটির একজন কর্মকর্তার মতে, পরিস্থিতি এমন নয় যে আকাশ ভেঙে পড়বে।
খবর অনুযায়ী, চীন তাদের বাণিজ্যকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে সরিয়ে এনেছে, বাণিজ্যিকভাবে তারা এখন অন্যান্য দেশের দিকে ঝুঁকছে।
চীনের শুল্ক প্রশাসনের মুখপাত্র লিউ দালিয়াংয়ের বরাত দিয়ে সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, চীনও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে শুল্ক আরোপ করেছে।
যেখানে দেখা যাচ্ছে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসাচ্ছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসাচ্ছে।
গত ২রা এপ্রিল থেকে ট্রাম্প যখন বিশ্বের সব দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, তখন থেকেই বিশ্ব বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
যদিও পরে তিনি অনেক দেশের পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক কিছুটা কমালেও, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আগের মতোই তিক্ত রয়েছে।
হোয়াইট হাউস সম্প্রতি স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও সেমিকন্ডাক্টরসহ ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেয়।
তবে পরে বাণিজ্য সচিব হাওয়ার লু cutnick জানান, সম্ভবত এক-দুই মাসের মধ্যে এই পণ্যগুলোর ওপরও শুল্ক বহাল করা হবে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে বলেন, কেউই ছাড় পাচ্ছে না।
তিনি উল্লেখ করেন, স্মার্টফোনের ওপর এখনো ২০ শতাংশ শুল্ক বহাল আছে এবং তা আরও বাড়তে পারে।
তবে, ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর বিনিয়োগকারীরা তেমন একটা আস্থা রাখতে পারেনি।
সোমবার জাপানের নিক্কেই সূচক ১.২ শতাংশ, হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ২.২ শতাংশ এবং সাংহাই ও শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জ যথাক্রমে ০.৮ শতাংশ ও ১.২ শতাংশ বেড়েছে।
ইউরোপীয় শেয়ার বাজারও ঊর্ধ্বমুখী ছিল, যেখানে লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচক ১.৬ শতাংশ, জার্মানির ড্যাক্স ২.২ শতাংশ এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চীনের লিউ দালিয়াং বলেন, “চীনের রপ্তানির জন্য ‘আকাশ ভেঙে পড়বে না’।
এই পদক্ষেপগুলো শুধু আমাদের অংশীদারদের উন্নতিতে সহায়তা করেনি, বরং আমাদের নিজেদের স্থিতিশীলতাও বাড়িয়েছে।”
চীনের পক্ষ থেকে তাদের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার এবং ব্যক্তিগত ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে, যা বৈশ্বিক অস্থিরতা থেকে রক্ষা করতে সহায়ক হবে।
চীন বর্তমানে ব্যক্তিগত ভোগ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি ভিয়েতনাম সফরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধ ও শুল্ক যুদ্ধের কোনো বিজয়ী নেই এবং সংরক্ষণবাদ কোনো ফল বয়ে আনবে না।
ভিয়েতনাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অষ্টম বৃহত্তম পণ্য সরবরাহকারী দেশ, কিন্তু ট্রাম্পের শুল্কনীতি বহাল থাকলে তাদের ওপর ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান