যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কেন্দ্রে ফিলিস্তিনপন্থী দুই শিক্ষার্থীর আটকের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। আটকদের সঙ্গে দেখা করে তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন তারা এবং একে ‘জাতীয় কলঙ্ক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
খবর অনুযায়ী, আটককৃত দুই শিক্ষার্থী হলেন মাহমুদ খলিল ও রুমিয়া ওজতুর্ক।
লুইজিয়ানার দুটি ডিটেনশন সেন্টারে গিয়ে আটককৃতদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, কোনো অপরাধের প্রমাণ ছাড়াই ওই দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে রাখা হয়েছে।
তারা জানান, আটকদের মধ্যে রুমিয়া ওজতুর্ক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী, এবং মাহমুদ খলিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র।
এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন কংগ্রেসের সদস্য ট্রয় কার্টার, বেনি থম্পসন, আয়ানা প্রেসলি, জিম ম্যাকগভার্ন, সিনেটর এড মার্কে এবং লুইজিয়ানার আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (ACLU) নির্বাহী পরিচালক আলামা ওডমস। প্রতিনিধি দলটি বাসিলে অবস্থিত সাউথ লুইজিয়ানা আইস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে রুমিয়া ওজতুর্কের সঙ্গে এবং জেনায় অবস্থিত সেন্ট্রাল লুইজিয়ানা আইস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে মাহমুদ খলিলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আয়ানা প্রেসলি জানান, আটককৃতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা একটি ‘বেআইনি ও স্বেচ্ছাচারী’ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘বাস্তব সময়ের তদারকি’ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ওজতুর্ককে আটকের পর ‘নিখোঁজ’ করে দেওয়া হয়েছিল এবং তাকে খাবার, পানি ও আইনি সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
মাহমুদ খলিল তার প্রথম সন্তানের জন্মও মিস করেছেন।
মার্কিন সিনেটর এড মার্কেই এই ঘটনাকে ‘জাতীয় কলঙ্ক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘আমরা এখন আমেরিকান ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে দাঁড়িয়ে আছি। ট্রাম্প প্রশাসন সংবিধানকে দুর্বল করে দিচ্ছে। আমরা দেখেছি, লুইজিয়ানার ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে তারা কতটা নিচে নামতে পারে।’
আরেক আইনপ্রণেতা জিম ম্যাকগভার্ন এই আটকদের ‘রাজনৈতিক বন্দী’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘এটা আইনের প্রয়োগ নয়, বরং আমাদের একটি স্বৈরাচারী রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
জানা গেছে, রুমিয়া ওজতুর্ক একটি পত্রিকায় ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার সমালোচনা করে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর, অনিরাপদ এবং অমানবিক’ পরিবেশে রাখা হয়েছে এবং চিকিৎসা পেতেও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আটককৃতরা আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে অতিরিক্ত ঠান্ডা রাখা হয়।
এদিকে, মাহমুদ খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি গত বছর কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সন্তান হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির সঙ্গে তার কিছু আদর্শগত বিরোধ রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান