বিখ্যাত ক্রিকেটার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ, যিনি ‘ফ্রেডি’ নামেই বেশি পরিচিত, তাঁর জীবনের এক কঠিন অধ্যায় নিয়ে মুখ খুলেছেন।
২০১৮ সালে জনপ্রিয় টিভি শো ‘টপ গিয়ার’-এর শুটিং-এর সময় এক ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পর, তিনি কিভাবে মানসিক উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই করেছেন, সেই কথাই জানিয়েছেন। এই দুর্ঘটনার পর জনসমক্ষে ফিরতে তাঁর দ্বিধা ছিল, এমনকি এক সময় ঘর থেকে বের হতেও পারতেন না তিনি।
ফ্লিনটফ, যিনি একসময় ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন, সম্প্রতি মাইক আথারটনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেছেন।
আথারটনও একসময় ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক ছিলেন এবং বর্তমানে ‘দ্য টাইমস’-এর ক্রিকেট সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করছেন। ফ্লিনটফ জানান, ২০২১ সালে ইংল্যান্ড দলের কোচ হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম সকালে, তিনি এতটাই উদ্বিগ্ন ছিলেন যে ঘর থেকে বের হতে দশবার চেষ্টা করেছিলেন।
ওয়েলসে একটি হোটেলে দলের অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা হওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি এতটাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ছিলাম যে ঘর থেকে বের হতে পারছিলাম না। অবশেষে, নাস্তার টেবিলে গিয়ে রিস টপলে এবং জোস বাটলারের সঙ্গে কথা বলি।”
নিজের খেলোয়াড়ি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর, ফ্লিনটফ টেলিভিশন জগতে পরিচিতি পান।
তবে তাঁর পুরনো বন্ধু এবং ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক রব কী-এর উৎসাহে তিনি আবার ক্রিকেটে ফিরে আসেন। প্রথমে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব পান, এবং পরবর্তীতে সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ তিনি ইংল্যান্ড লায়ন্স-এর প্রধান কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ফ্লিনটফের এই ফিরে আসাটা শুধু একটি খেলা থেকে অন্যটিতে ফেরার গল্প নয়, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়ানোর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
খেলোয়াড়ি জীবন থেকে শুরু করে দুর্ঘটনার পর মানসিক চাপ কাটিয়ে ওঠা, সব ক্ষেত্রেই তিনি সাহস ও দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর এই অভিজ্ঞতা অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা যোগায়, যারা জীবনের কঠিন পরিস্থিতিতে মানসিক উদ্বেগের শিকার হন।
তাঁর এই কথাগুলো সমাজের মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান