আজকাল হাঁটুতে ব্যথার সমস্যা যেন খুবই সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অল্প বয়সেই অনেকের হাঁটুতে ব্যথা হয়, আবার বয়স্কদের ক্ষেত্রে তো এটি একটি নিয়মিত সমস্যা।
কিন্তু এই ব্যথার আসল কারণটা কি, জানেন? অনেক সময় হাঁটু ব্যথার মূল কারণ থাকে আমাদের কোমরের দুর্বলতা বা সঠিকভাবে নড়াচড়া করতে না পারা।
বিষয়টা হয়তো অনেকের কাছেই নতুন লাগছে, কিন্তু ফিটনেস বিশেষজ্ঞ ডানা সান্তাস-এর মতে, আমাদের কোমর এবং হাঁটুর মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোমরের কিছু সমস্যা হাঁটুতে ব্যথার কারণ হতে পারে, এবং এর সমাধানে কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
আমাদের কোমরের অস্থিসন্ধি (hip joint) বহু দিকে সহজে নড়াচড়া করতে পারে, কিন্তু হাঁটু একটি সরল সন্ধি, যা মূলত সামনে-পেছনে বাঁকতে পারে।
যখন আমাদের কোমর স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করতে পারে না – যেমন শক্ত হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা অথবা সঠিকভাবে নাড়াচাড়া করতে না পারার কারণে – তখন হাঁটু সেই ঘাটতি পূরণ করতে গিয়ে অতিরিক্ত চাপে পরে।
এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে হাঁটুতে ব্যথা হতে শুরু করে এবং মারাত্মক আঘাতের সম্ভবনাও থাকে।
তাহলে, কিভাবে বুঝবেন আপনার কোমর হাঁটু ব্যথার কারণ হচ্ছে কিনা?
কিছু লক্ষণ দেখে বিষয়টি বোঝা যেতে পারে:
যদি এই লক্ষণগুলোর কোনোটি আপনার মধ্যে দেখা যায়, তাহলে সম্ভবত আপনার কোমর হাঁটু ব্যথার কারণ।
এক্ষেত্রে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তবে, কিছু সাধারণ ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমরকে সচল করে হাঁটু ব্যথা কমানো যেতে পারে।
আসুন, তেমন কয়েকটি ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
১. কোমরের পেশি শিথিল করা:
কোমরের পেশি শক্ত হয়ে থাকলে তা হাঁটুতে চাপ সৃষ্টি করে।
তাই, এই পেশিগুলোকে শিথিল করা প্রয়োজন।
এর জন্য আপনি “থ্রি-ওয়ে হিপ ফ্লেক্সর রিলিজ” ব্যায়ামটি করতে পারেন।
২. ভিতরের দিকের পেশি শক্তিশালী করা:
কোমরের ভেতরের দিকের এবং নিতম্বের পেশি দুর্বল থাকলে, তা উরুর হাড় এবং হাঁটুর সংযোগে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
তাই এই পেশিগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
এর জন্য আপনি “গ্লুট ব্রিজ” ব্যায়াম করতে পারেন।
এক্ষেত্রে, একটি যোগা ব্লক অথবা ভাঁজ করা তোয়ালে আপনার হাঁটুর মাঝে রেখে ব্যায়ামটি করতে পারেন।
৩. সাইড-ল্যাটারাল লাঞ্জ:
আমাদের শরীরের একদিকে (পাশাপাশি) নড়াচড়া করার ক্ষমতা খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা কোমরকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
সাইড-ল্যাটারাল লাঞ্জ ব্যায়ামের মাধ্যমে এই নড়াচড়া স্বাভাবিক করা যায়।
৪. টিস্যু ম্যাসাজ:
ফোম রোলার অথবা ম্যাসাজ গান ব্যবহার করে কোমরের পেশিগুলোর টান কমানো যেতে পারে।
এতে পেশিগুলো নমনীয় হয় এবং ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত হয়।
৫. সঠিক স্ট্রেচিং:
কঠিন স্ট্রেচিংয়ের পরিবর্তে, হালকা এবং কার্যকরী স্ট্রেচিং করুন।
চেয়ারে বসে বা দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে স্ট্রেচিং করা ভালো।
উপরের ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করলে কোমরের নড়াচড়া স্বাভাবিক হবে, পেশি শক্তিশালী হবে এবং হাঁটু ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।
মনে রাখবেন, কোনো নতুন ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
স্বাস্থ্য বিষয়ক আরও তথ্যের জন্য আমাদের সাথে থাকুন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন