দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ্য ‘লোটাস লণ্ঠন উৎসব’। প্রতি বছর এই উৎসবটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যা উদযাপন করা হয় বুদ্ধপূর্ণিমার আগে।
এই উৎসবে কোরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা হাজারো মানুষ অংশ নেয়, যাদের মধ্যে ছিলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষজন।
উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো বিশাল লণ্ঠন মিছিল, যেখানে নানা আকারের এবং রঙের পদ্ম আকৃতির লণ্ঠন নিয়ে শোভাযাত্রা করেন সকলে।
ঐতিহ্যবাহী কোরিয়ান পোশাক ‘হানবক’ পরিহিত বহু মানুষকে এই উৎসবে দেখা যায়।
লণ্ঠনগুলো শুধু আলো ছড়ায় না, এটি বৌদ্ধ ধর্মের গভীর তাৎপর্য বহন করে।
বিভিন্ন মন্দির থেকে তৈরি করা হয় এই লণ্ঠনগুলো, যেগুলোর মধ্যে বুদ্ধের মূর্তি, ড্রাগন, হাতি, পদ্ম ফুল এবং ফিনিক্সের মতো বিভিন্ন আকার ফুটিয়ে তোলা হয়।
রাতে সিউলের রাস্তায় এই লণ্ঠনগুলো এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সৃষ্টি করে।
ছোট লণ্ঠনগুলো সাধারণত ভিক্ষু ও অনুসারীরা বহন করেন, আর বড় আকারের আকর্ষণীয় লণ্ঠনগুলো নেওয়া হয় গাড়িতে করে।
এই উৎসবের মাধ্যমে সারা বিশ্বে বৌদ্ধ ধর্মের আলো ছড়ানোর বার্তা দেওয়া হয়।
ইউনেস্কো (UNESCO) এই উৎসবকে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা কোরিয়ার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।
শুধু তাই নয়, এটি কোরিয়ার জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবেও স্বীকৃত।
প্রতি বছর প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ এই উৎসবে যোগ দেন, যেখানে কোরিয়ানদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের পর্যটকদেরও আনাগোনা দেখা যায়।
উৎসবের অংশ হিসেবে, সিউলের জোগ্য টেম্পেলসহ (Jogye temple) বিভিন্ন মন্দির এবং চেওংগে ঝর্ণা (Cheonggye stream)-র ধারে বর্ণিল লণ্ঠন দিয়ে সাজানো হয়।
উৎসবের সমাপ্তি হয় বুদ্ধপূর্ণিমার দিনে, যেখানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মন্দিরে গিয়ে বিশেষ প্রার্থনা ও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এই উৎসব দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: Associated Press