চেলসি মহিলা দলের ‘২০২৪-২৫’ মরসুমে মহিলা সুপার লিগ (WSL) জয়লাভ: খেলোয়াড়দের মূল্যায়ন
ইংলিশ মহিলা ফুটবলের শীর্ষস্থানীয় দল চেলসি, সম্প্রতি তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে মহিলা সুপার লিগ (WSL) শিরোপা জয় করেছে। এই জয়ে দলের খেলোয়াড়দের অবদান ছিল অনস্বীকার্য।
আসুন, এই নিবন্ধে আমরা প্রতিটি খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন করি, তাদের শক্তি এবং দুর্বলতাগুলো বিবেচনা করে।
গোলরক্ষক
হানা হাম্পটন: এই মরসুমে দলের এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে নিজের জায়গা পাকা করেছেন ২৪ বছর বয়সী হানা হাম্পটন। লিগে ক্লিন শীটের দিক থেকে তিনি দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন এবং তার বল বিতরণের ক্ষমতা ছিল প্রশংসনীয়।
যদিও প্রতিপক্ষের আক্রমণ সবসময় তার উপর আসেনি, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তিনি দলের জন্য স্মরণীয় সেভ করেছেন, যা অপরাজিত দৌড় বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।
ডিফেন্ডার
মিলি ব্রাইট: চেলসির ক্যাপ্টেন মিলি ব্রাইট তার সেরা ফর্মে ফিরে এসেছেন। রক্ষণভাগের কেন্দ্রে তিনি ছিলেন খুবই নির্ভরযোগ্য।
৩১ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় প্রতিটি লিগ ম্যাচ শুরু করেছেন এবং সম্প্রতি তিনি ২০০তম WSL-এ অংশগ্রহণ করেছেন, যা তার ধারাবাহিকতার প্রমাণ। বাতাসে বল নিয়ন্ত্রণে তার দক্ষতা এবং চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ, যা চেলসির আক্রমণ তৈরি করতে সহায়ক হয়েছে।
লুসি ব্রোঞ্জ: বার্সেলোনা থেকে যোগ দেওয়ার পর থেকে এই ইংলিশ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় অসাধারণ পারফর্ম করেছেন। তিনি সোনিয়া বম্পাস্টরের দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলটি তিনিই করেছিলেন।
মাঠের ভেতরে এবং বাইরে, তিনি ছিলেন দলের নেতা। আক্রমণভাগে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখতে এবং রক্ষণকে শক্তিশালী করতে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
ন্যাথালি বিজর্ন: সুইডিশ এই ডিফেন্ডার হয়তো অনেকের নজর কাড়েননি, তবে চেলসির রক্ষণভাগের সাফল্যের পেছনে তার অবদান ছিল অপরিহার্য। ব্রাইটের সাথে তার জুটি ছিল খুবই নির্ভরযোগ্য।
তার পাসিং এবং খেলার ধরন দলের আক্রমণ তৈরিতে সাহায্য করেছে।
স্যান্ডি বাল্টিমোর: সম্ভবত চেলসির এই মরসুমের সেরা সাইনিং ছিলেন তিনি। ফরাসি এই খেলোয়াড়কে লেফট-ব্যাক পজিশনে খেলানো হয়েছে, যা তার স্বাভাবিক খেলার জায়গা ছিল না।
তবে তিনি দ্রুত মানিয়ে নিয়েছেন। তার গতি, ক্ষিপ্রতা এবং আক্রমণাত্মক মানসিকতা বাম দিক থেকে দলের আক্রমণকে শক্তিশালী করেছে।
মিডফিল্ডার
সিয়োকে নুয়াসকেন: জার্মান এই মিডফিল্ডার দলের হয়ে ভালো পারফর্ম করেছেন। তিনি দলের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে খেলেছেন, তবে মিডফিল্ডে তার খেলাটা ছিল চোখে পড়ার মতো।
গোল করার ক্ষেত্রেও তার ভালো দক্ষতা রয়েছে।
এরিন কাটবার্ট: স্কটিশ এই মিডফিল্ডার চেলসির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ২৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় দলের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তিনি দলের নেতা এবং দলের দ্বিতীয় সিনিয়র খেলোয়াড়।
উইক কাপটেইন: এই তরুণ খেলোয়াড় তার খেলার মাধ্যমে সকলের নজর কেড়েছেন। মাঝেমধ্যে দলের প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়া এই খেলোয়াড় দলের আক্রমণকে শক্তিশালী করেছেন।
ফরোয়ার্ড
মায়রা রামিরেজ: এই কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড দলের আক্রমণভাগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ভীতি সৃষ্টি করতে পারদর্শী।
লরেন জেমস: ইনজুরির কারণে লরেন জেমসকে কিছু সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। তবে ফিরে আসার পর তিনি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন।
তার টেকনিক্যাল স্কিল দলের আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করেছে।
গুরো রাইটেন: অভিজ্ঞ এই খেলোয়াড় দলের জন্য নির্ভরযোগ্য ছিলেন। দলের হয়ে গোল করার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অন্যতম।
অ্যাজি বিভার-জোন্স: চেলসি একাডেমির এই খেলোয়াড় তার অসাধারণ পারফরম্যান্স বজায় রেখেছেন। তিনি প্রতিটি ম্যাচেই খেলেছেন এবং গোল করার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা প্রশংসনীয়।
এই মরসুমে চেলসি মহিলা দলের খেলোয়াড়দের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় WSL শিরোপা জয় সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। দলের প্রতিটি খেলোয়াড় তাদের সেরাটা দিয়েছে, যা চেলসিকে এই সাফল্যের দিকে নিয়ে গেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান