যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের আঁচ এখনো থামেনি। সম্প্রতি চীন থেকে আসা কিছু পণ্যের ওপর শুল্কের হার কমানো হলেও, এর প্রভাব এখনো অনেক মার্কিনির কেনাকাটার অভ্যাসে পরিবর্তন আনছে।
বিশেষ করে, শুল্ক কমানোর পরেও চীনের তৈরি স্বল্প মূল্যের পণ্য, যেমন পোশাক, ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট ইত্যাদি কেনাকাটায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি কমেনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর যে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, তা এখনো বহাল রয়েছে। এর ফলে, Shein এবং Temu-এর মতো ই-কমার্স সাইটগুলোতে কেনাকাটা করা মার্কিন নাগরিকদের জন্য খরচ বাড়ছে।
আগে এই সাইটগুলো থেকে স্বল্পমূল্যে জিনিস পাওয়া যেত, কিন্তু শুল্কের কারণে এখন দাম বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে, অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আগে, নির্দিষ্ট মূল্যের কম পণ্যের ওপর শুল্ক ছিল না। এই সুযোগে, চীনা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের সরবরাহ বাড়ায়। কিন্তু শুল্ক আরোপের ফলে সেই পরিস্থিতি বদলে যায়।
যদিও সম্প্রতি কিছু শুল্ক কমানো হয়েছে, তবে তা যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে, ডাক বিভাগের মাধ্যমে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক কমলেও, UPS, FedEx-এর মতো বাণিজ্যিক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আসা পণ্যের ওপর শুল্কের হার এখনো অনেক বেশি।
এই শুল্কের মূল কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ধরনের ছোট প্যাকেজের মাধ্যমে মাদক পাচার বন্ধ করতে চায়। এছাড়াও, তারা চায় তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিতে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই শুল্কের কারণে মার্কিন ভোক্তাদের, বিশেষ করে কম আয়ের পরিবারগুলোর ওপর বেশি চাপ পড়বে। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এবং পণ্য পেতে বেশি সময় লাগবে।
বর্তমানে, এই শুল্ক কমানোর ফলে ই-কমার্স কোম্পানিগুলো তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস করতে শুরু করেছে। Shein এবং Temu-এর মতো কোম্পানিগুলো এখন যুক্তরাষ্ট্রের গুদামগুলোতে পণ্য মজুদ করছে, যাতে দ্রুত সরবরাহ করা যায়।
তবে অনেক পণ্যের সরবরাহ কমে যাওয়ায় কিছু ক্রেতা অভিযোগ করছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। এর ফলে বিশ্বব্যাপী পণ্যের সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রভাব পড়তে পারে।
এই দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যেকার বাণিজ্য বিরোধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতেও পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে।
তথ্য সূত্র: CNN