বিশাল ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করা একজন পেশাদার সার্ফার গ্যারেট ম্যাকনামারা। ঢেউয়ের উচ্চতা কখনও কখনও একটি বহুতল বাড়ির সমান হয়, সেই বিশাল জলরাশির বিরুদ্ধে লড়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি।
২০১৬ সালে এক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পর তার জীবন এবং দৃষ্টিভঙ্গিতে আসে বিশাল পরিবর্তন। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন এই কিংবদন্তি সার্ফার।
৫৭ বছর বয়সী হাওয়াই দ্বীপের বাসিন্দা ম্যাকনামারা, যিনি ‘100 Foot Wave’ নামের একটি টেলিভিশন সিরিজে কাজ করেন, পরিচিতি পেয়েছেন বিশাল ঢেউয়ে সার্ফিং করার জন্য।
২০১১ সালে পর্তুগালের নাজারেতে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঢেউয়ে (২৩.৮ মিটার বা ৭৮ ফুট) সার্ফিং করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। যদিও সেই রেকর্ডটি বর্তমানে অন্য কারও দখলে।
কিন্তু এত সাফল্যের পরেও, জীবনের উত্থান-পতন থেকে দূরে থাকতে পারেননি ম্যাকনামারা। ২০১৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলের কাছে মাভেরিক্সে সার্ফিং করার সময় এক দুর্ঘটনায় তার কাঁধ ১০ টুকরো হয়ে যায়।
সেই সময়টা তার জন্য ছিল অত্যন্ত কঠিন। শারীরিক কষ্টের পাশাপাশি মানসিক দিক থেকেও কঠিন সময় পার করতে হয়েছে তাকে।
ম্যাকনামারার স্ত্রী নিকোলের ভাষ্যমতে, এই দুর্ঘটনার পর তাদের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে এবং ম্যাকনামারা এক ধরনের হতাশায় ভুগতে শুরু করেন। নিকোল আরও জানান, সেই সময় ম্যাকনামারা সম্ভবত ভুল কারণে খ্যাতি এবং পরিচিতি পেতে চাচ্ছিলেন।
এই ঘটনার পর ম্যাকনামারা জীবনের প্রতি নতুন করে দৃষ্টিপাত করেন। তিনি বলেন, “এই ঘটনাটি আমাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে।
আমি এখন জীবনের অন্য দিকগুলো উপভোগ করছি। পরিবারকে সময় দিচ্ছি, সবকিছু ভালোভাবে করার চেষ্টা করছি এবং ধীরে ধীরে জীবনকে উপভোগ করতে শিখেছি।”
ম্যাকনামারার মতে, একজন বিশাল ঢেউয়ের সার্ফারের জীবন অনেক অনিশ্চয়তা এবং ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে যায়। তার স্ত্রী নিকোল সবসময় তাকে সমর্থন জুগিয়েছেন।
তাদের সম্পর্কের গভীরতা এবং একে অপরের প্রতি ভালোবাসাই তাদের এই কঠিন পথ পাড়ি দিতে সাহায্য করেছে।
বর্তমানে ম্যাকনামারা তার পরিবারকে সময় দিচ্ছেন এবং ভবিষ্যতে তরুণ সার্ফারদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আগ্রহী।
তিনি চান, তার ছেলে ব্যারেল যেন এই খেলা চালিয়ে যায়, তবে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে, যাতে কোনো ঝুঁকির সম্মুখীন না হতে হয়। ভবিষ্যতে তিনি হয়তো জেট স্কি চালানো চালিয়ে যাবেন, যা তাকে সমুদ্রের কাছাকাছি রাখবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন