ফিলিস্তিনের ‘নাকবা’, যা আজও চলমান
ফিলিস্তিনি জনগণের জীবনে ১৯৪৮ সালের সেই দিনটি ছিল এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা। ইতিহাসে যা ‘নাকবা’ (বিপর্যয়) নামে পরিচিত। এই ঘটনার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের নিজেদের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়, যা তাদের জীবনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে।
প্রতি বছর, এই ‘নাকবা’র স্মৃতিচারণ করা হয়, যা ফিলিস্তিনিদের দুঃখ, বেদনা এবং তাদের অধিকারের প্রতি অবিচল থাকার বার্তা দেয়।
নাকবার মূল ঘটনা ছিল ১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। যুদ্ধের ফলস্বরূপ, হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি, গ্রাম এবং শহর থেকে বিতাড়িত হয়েছিল।
তাদের অনেকেই শরণার্থী হিসেবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এর ফলে ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন সম্পূর্ণরূপে বদলে যায়। তারা তাদের ভূমি, সংস্কৃতি এবং আত্মপরিচয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে।
এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া এখনো ফিলিস্তিনিদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে।
বর্তমানেও ফিলিস্তিনিদের জীবনে ‘নাকবা’র প্রভাব বিদ্যমান। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এখনো চলছে, এবং ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
তাদের ভূমি, স্বাধীনতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আজও পূরণ হয়নি। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অবরোধ এবং পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন সহ বিভিন্ন কারণে ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে।
নাকবার স্মৃতিচারণ, শুধু একটি ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিচ্ছবি নয়, বরং এটি ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের প্রতীক। এই শোক পালনের মাধ্যমে তারা তাদের অতীতের বেদনাকে স্মরণ করে এবং ভবিষ্যতের জন্য তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে।
এই স্মৃতিচারণ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের স্বীকৃতি আদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ফিলিস্তিনি জনগণের এই সংকট একটি জটিল রাজনৈতিক বিষয়। এর সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন।
ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা এবং তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা জরুরি। বর্তমানে, এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনা এবং সমঝোতার বিকল্প নেই।
নাকবার ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয়, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তি ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব কতখানি।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যতের জন্য একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা