শিরোনাম: নিজের গ্র্যাজুয়েশন নাকি মুমূর্ষু মাসি? দ্বিধায় কিশোরী, জানতে চাইল পরামর্শ
একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে সতেরো বছর বয়সী এক তরুণী। একদিকে নিজের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন, স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষার ফল প্রকাশের উৎসব – গ্র্যাজুয়েশন। অন্যদিকে, তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, মাসি, যিনি তাঁর কাছে মায়ের মতোই, মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এমতাবস্থায়, তিনি দ্বিধায় পড়েছেন, এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন, নাকি মাসির কাছেই থাকবেন? এই দ্বিধা নিয়েই তিনি সাহায্য চেয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ওই তরুণী জানিয়েছেন, তাঁর মাসি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এবং তাঁর অবস্থা এখন খুবই সঙ্কটজনক। মাসি তাঁদের সঙ্গেই থাকেন। তরুণীর কথায়, মাসি তাঁর দ্বিতীয় মা। এমন অবস্থায়, গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়াটা তাঁর কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এই অনুষ্ঠানে যোগ দিলে সকাল সাতটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত তাঁকে বাড়ির বাইরে থাকতে হবে। এই দীর্ঘ সময় মাসিকে একা রেখে যাওয়াটা তাঁর পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণী তাঁর পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি এই বছর গ্র্যাজুয়েশন করছেন। স্বাভাবিকভাবেই, এই দিনটি তাঁর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি চেয়েছিলেন, এই বিশেষ দিনে সবাই তাঁর পাশে থাকুক। কিন্তু মাসির অসুস্থতার কারণে, তিনি দ্বিধায় পড়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, যখন তিনি তাঁর এই ইচ্ছের কথা মাসির চল্লিশোর্ধ মেয়ের কাছে জানান, তখন তিনি তীব্র আপত্তি করেন। তিনি তরুণীকে এই সময়ে হাসিখুশি থাকার জন্য ‘স্বার্থপর’ বলেও মন্তব্য করেন।
আশ্চর্যজনকভাবে, এই বিষয়ে মাসির বক্তব্য ছিল ভিন্ন। তিনি তরুণীকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যেন সে অবশ্যই যায় এবং নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে। মাসি চান, তাঁর নাতনি যেন গর্বের সঙ্গে মঞ্চে ওঠে।
এই ঘটনার পর, তরুণীর মাসির মেয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি তরুণীকে জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে গ্র্যাজুয়েশনে যাওয়াটা ‘সবচেয়ে খারাপ সিদ্ধান্ত’।
এই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত, তা জানতে চেয়ে ওই তরুণী জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ‘রেডিট’-এর একটি ফোরামে নিজের এই সমস্যার কথা জানান। সেখানে অনেকেই তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, মাসি যখন তাঁকে গ্র্যাজুয়েশনে যেতে বলছেন, তখন তাঁর দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি আসলে মাসির ইচ্ছাকেই সম্মান জানাবেন। অনেকে আবার মনে করেন, তরুণীর এই সিদ্ধান্ত তাঁর মাসিকে সম্মানিত করবে। কারণ, মাসি নিশ্চয়ই চাইবেন, তাঁর আদরের নাতনি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত উদযাপন করুক।
এই ঘটনা আমাদের সমাজে পরিবারের সদস্যদের মধ্যেকার সম্পর্ক এবং একজনের অসুস্থতার সময়ে অন্যদের অনুভূতির জটিলতাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়। একইসঙ্গে, প্রিয়জনের ইচ্ছাকে সম্মান জানানো এবং নিজের ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার গুরুত্বও বুঝিয়ে দেয়।
তথ্য সূত্র: পিপল