যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার আগ্রাসন : ইউক্রেনে রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলা, ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা
সোমবার ইউক্রেনের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাশিয়া দেশটির উপর ইতিহাসের বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এই হামলায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন ব্যবহার করেছে।
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর যোগাযোগ বিভাগের প্রধান ইউরি ইগনাটের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এপি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার রাতে রাশিয়ার এই হামলায় ৩৫৫টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়।
একইসাথে, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়া এই হামলায় ৯টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও ছুঁড়েছে।
এতে কিছু বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
শনিবার রাতেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা হয়।
এতে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয় এবং বহু মানুষ আহত হয়।
ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধের শুরু থেকে এটি রাশিয়ার সবচেয়ে বড় বিমান হামলা ছিল, যেখানে ৬৯টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২৯৮টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়।
যদিও এই সংখ্যাগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি এবং রাশিয়া কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
শান্তি আলোচনা শুরুর প্রচেষ্টা এবং উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা চললেও তেমন ফল পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে বোমা হামলা বাড়িয়ে পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল’ হয়ে গিয়েছেন।
রবিবার এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “আমি সবসময় রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছি, তবে তার মধ্যে কিছু একটা ঘটেছে।
তিনি একেবারে পাগল হয়ে গেছেন!”
ট্রাম্প আরও বলেন, পুতিন ‘কোনো কারণ ছাড়াই’ ইউক্রেনের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুঁড়ে বহু মানুষকে ‘অকারণে হত্যা’ করছেন।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি পুতিন পুরো ইউক্রেন জয় করতে চান, তবে এটি ‘অবশ্যই রাশিয়ার পতনের কারণ হবে!’
তবে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতিও ট্রাম্প অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, জেলেনস্কি যেভাবে কথা বলছেন, তা ‘তাঁর দেশের জন্য কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না’।
যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে বিরল ঘটনা হিসেবে রাশিয়া ও ইউক্রেন রবিবার আরও কয়েকশ’ যুদ্ধবন্দীকে বিনিময় করেছে।
এটি ছিল এই যুদ্ধের তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ের বন্দী বিনিময়।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উভয় পক্ষই ৩০৩ জন করে সৈন্যকে বিনিময় করেছে।
এর আগে শনিবার উভয় পক্ষই ৩০৭ জন করে এবং শুক্রবার ৩৯০ জনকে মুক্তি দেয়।
এটি ছিল যুদ্ধ শুরুর পর সবচেয়ে বড় বন্দী বিনিময়ের ঘটনা।
উল্লেখ্য, ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হওয়া শান্তি আলোচনায় উভয় পক্ষ ১০০০ জন করে যুদ্ধবন্দী ও বেসামরিক আটককৃতদের বিনিময়ের বিষয়ে রাজি হয়েছিল।
সেই আলোচনার ফলস্বরূপ এই বন্দী বিনিময় সম্পন্ন হয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস