ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যেকার সম্পর্ক আবারও তিক্ততার দিকে মোড় নিয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসন বিরোধী অভিযানে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে এই নতুন দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। মূলত, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন নিউসম।
খবর সূত্রে জানা যায়, এর আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ট্রাম্প, নিউসমের আপত্তির পরেও, লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন।
গভর্নর নিউসম এর প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপকে ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার মতে, এটি “কর্তৃত্ববাদের দিকে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ”।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতা ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেট দলের প্রভাবশালী নেতা নিউসমের মধ্যেকার এই বিরোধ তাদের নিজ নিজ রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষারই বহিঃপ্রকাশ।
বিশেষ করে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের নেতৃত্ব দিতে পারেন এমন একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন নিউসম।
অন্যদিকে, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ক্যালিফোর্নিয়ার নীতির কড়া সমালোচক।
অতীতে তিনি রাজ্যের জল সংকট, দাবানল পরিস্থিতি এবং অভিবাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে ক্যালিফোর্নিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
এমনকি, রাজ্যের কিছু সিদ্ধান্তের কারণে ফেডারেল সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নিউসম একদিকে যেমন ফেডারেল সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চান, তেমনি ডেমোক্রেট দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি হিসেবেও নিজেকে তুলে ধরতে চান।
এই উভয় সংকটের মধ্যে কিভাবে তিনি ভারসাম্য রক্ষা করেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তবে, এর আগে নিউসম ও ট্রাম্পের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্কও দেখা গেছে।
বিশেষ করে, ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল এবং কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া সহায়তার জন্য নিউসম তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।
এই মুহূর্তে, ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে নিউসমের আইনি লড়াই এবং এর রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলছে।
অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ গণতন্ত্রের প্রতি এক ধরনের চ্যালেঞ্জ।
নিউসমও সতর্ক করে বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়া প্রথম হলেও, এই ধরনের ঘটনা এখানেই শেষ হবে না।
অন্যান্য রাজ্যেও এর প্রভাব পড়তে পারে এবং এটি গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস