চীনের বাজারে তুমুল জনপ্রিয় একটি খেলনা পুতুল, লাবুবু, সম্প্রতি নিলামে দেড় লক্ষ ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। এই খবরটি এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়।
বেইজিং-এ অনুষ্ঠিত এই নিলামে দুর্লভ প্রথম প্রজন্মের লাবুবু পুতুলটি ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার (প্রায়) বেশি দামে বিক্রি হয়। সাধারণত মূল্যবান অলঙ্কার এবং আধুনিক শিল্পকর্মের নিলাম করে থাকে এমন একটি নিলাম ঘর, ইয়ংলে ইন্টারন্যাশনাল অকশন হাউজ, এই বিশেষ নিলামটির আয়োজন করে।
কিন কাছিং লং নামক হংকংয়ের একজন শিল্পী এই লাবুবু পুতুল তৈরি করেছেন। চীনের খেলনা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান পপ মার্টের মাধ্যমে এটি বাজারজাত করা হয়।
বর্তমানে লাবুবু খেলনাটি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। অনেকটা এলফের মতো দেখতে এবং খরগোশের শরীরের আদলে তৈরি এই পুতুলগুলো একদিকে যেমন ভয়ঙ্কর, তেমনই আকর্ষণীয়। এই কারণে, এটির ক্রেতাদের মধ্যে এটি সংগ্রহ করার উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে। এমনকি, চীনেও, যেখানে পপ মার্টের উৎপাদিত বেশিরভাগ খেলনা তৈরি হয়, সেখানেও লাবুবু পাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
নিলামে মোট ৪৮টি লাবুবু পুতুল ছিল। এর মধ্যে একটি ১৩১ সেন্টিমিটার (৫১ ইঞ্চি) উচ্চতার সবুজ রঙের পুতুল ১ লক্ষ ৫০ হাজার ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হয়।
এছাড়াও, ১৬০ সেন্টিমিটার (৬৩ ইঞ্চি) উচ্চতার বাদামী রঙের একটি লাবুবু পুতুল ১ লক্ষ ১৪ হাজার ডলারে বিক্রি হয়। জানা গেছে, বিশ্বে এই ধরনের পুতুল মাত্র ১৫টি রয়েছে।
নিলামে অংশ নেওয়া একজন ক্রেতা অনলাইনে এই দুর্লভ পুতুলটি কিনেছেন এবং নিলামকারী মঙ্গলবার বেইজিং-এর একটি প্রদর্শনী কেন্দ্রে এই কথা জানান।
ইয়ংলে অকশনের প্রতিষ্ঠাতা ঝাও জু জানান, লাবুবু বর্তমানে চীনে একটি ট্রেন্ডি খেলনা হিসেবে পরিচিত এবং বিশ্বজুড়ে এর ক্রেতা বাড়ছে। তিনি আরও জানান, তারা ভবিষ্যতে প্রতি মাসে লাবুবু এবং অন্যান্য আকর্ষণীয় শিল্পকর্মের নিলাম করার পরিকল্পনা করছেন।
নিলামে অংশ নেওয়া ক্রেতাদের নিলামের দামের ওপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ কমিশন দিতে হয়েছে।
এই খেলনার চাহিদা এতটাই বেশি যে, বাজারে এর দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
উদাহরণস্বরূপ, লাবু “৩.০” সিরিজের একটি “রহস্য বাক্স” (blind box), যার আসল দাম ছিল প্রায় ৮১ ডলার, সেটি এখন সেকেন্ড-হ্যান্ড বাজারে ২৭৮ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
লাবুর এই জনপ্রিয়তা পপ মার্টের ব্যবসাকেও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।
গত বছর, এই চীনা কোম্পানির বিশ্বব্যাপী লাভের পরিমাণ ১২৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং চীনের বাজারে তাদের আয় হয়েছে ১.০৯ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেশি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন