যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির জটিলতা: ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে কিমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া নামের এক ব্যক্তির নির্বাসন ও পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা ফৌজদারি মামলার ঘটনা। তাঁর আইনজীবীরা এবার সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন সাবেক ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, আদালত অবমাননা করে গার্সিয়াকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে।
আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, কিমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে প্রথমে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়, যদিও একটি আদালত তাঁকে সেখানে পাঠাতে নিষেধ করেছিল। আইনজীবীদের ভাষ্যমতে, এরপর তাঁকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও গড়িমসি করে ট্রাম্প প্রশাসন।
গার্সিয়ার আইনজীবীরা আদালতের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, আদালতকে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। এমনকি, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তারা গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো প্রমাণ জমা দেয়নি। আইনজীবীরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন।
মামলার শুনানিতে আইনজীবীরা উল্লেখ করেন, আদালত বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও প্রশাসন গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং, বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। আইনজীবীরা জানান, সরকারি কৌঁসুলিরা তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিতেও অস্বীকার করেছেন। তাঁদের মতে, সরকারি কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রায় নব্বইয়ের বেশিবার বিশেষ অধিকারের অজুহাত দেখিয়ে তাঁরা কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি।
আদালতে জমা দেওয়া নথিতে আইনজীবীরা আরও উল্লেখ করেছেন, গার্সিয়াকে এল সালভাদরের একটি কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, যা তাঁর জন্য নিরাপদ ছিল না। এমনকি, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বিষয়টি এড়িয়ে যান, যদিও আদালত গার্সিয়াকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এই মামলার প্রেক্ষাপটে আইনজীবীরা বিচারকের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে প্রশাসনকে জরিমানা করা হয় এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁরা হয় নতুন করে নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিতে অথবা একজন নিরপেক্ষ তদন্তকারী নিয়োগের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছেন।
বর্তমানে, গার্সিয়া যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল হেফাজতে রয়েছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অভিবাসী পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। আগামী শুক্রবার টেনেসিতে তাঁর শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে, যেখানে তিনি তাঁর দোষ স্বীকার করবেন কিনা, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই মামলার শুনানি যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি এবং আইনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন