মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বহুল আলোচিত একটি মামলা এবং সেই মামলার আসামি নিয়ে তৈরি হওয়া একটি ব্যঙ্গাত্মক সঙ্গীতনাট্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ‘লুইগি দ্য মিউজিক্যাল’ নামের এই নাটকটি মূলত স্বাস্থ্যখাত, প্রযুক্তি এবং জনসাধারণের মধ্যে সাড়া জাগানো কিছু ঘটনার প্রেক্ষাপটে তৈরি করা হয়েছে।
আসুন, এই নাটকের পেছনের গল্পটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
নিউ ইয়র্কের একটি ফেডারেল কারাগারে বন্দী লুইগি ম্যাঙ্গিওনের বিরুদ্ধে ইউনাইটেড হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রায়ান থম্পসনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে ‘লুইগি দ্য মিউজিক্যাল’ নামের একটি নাটক।
যেখানে লুইগির চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনি স্টেইন। নাটকের কাহিনী সাজানো হয়েছে ব্রুকলিনের ফেডারেল কারাগারে, যেখানে লুইগির সঙ্গে বন্দী ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী ডিডি এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায়ী স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রাইড।
নাটকের অন্যতম প্রযোজক ক্যালেব জেরিঙ্গিউ জানান, এই নাটকের মূল উদ্দেশ্য লুইগির অপরাধকে মহিমান্বিত করা নয়, বরং সমাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা।
তিনি বলেন, “আমরা আসলে সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দর্শকদের মনে প্রশ্ন জাগাতে চাই। স্বাস্থ্যখাত এর মধ্যে অন্যতম, এছাড়া প্রযুক্তি এবং বিনোদন জগতও আমাদের আলোচনার বিষয়।”
নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে জনি স্টেইন জানান, এটি একটি ‘পিরিয়ড পিস’, যা মার্চ মাসকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই দর্শক এই ধরনের ঘটনার পেছনের কারণগুলো নিয়ে চিন্তা করুক এবং এর গভীরে প্রবেশ করুক।”
ইতিমধ্যে, সান ফ্রান্সিসকোর টেলর স্ট্রিট থিয়েটারে নাটকটির পাঁচটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সবগুলো টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
দর্শকদের আগ্রহের কারণে পরবর্তীতে আরও একটি প্রদর্শনী যুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, লুইগি ম্যাঙ্গিওনের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক রাজ্যের আদালতে একটি মামলা চলছে এবং আগামী সেপ্টেম্বরে তার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এই নাটকের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে এমন একটি সময়ে, যখন জনসাধারণের মধ্যে এই ধরনের আলোচিত ঘটনাগুলো নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে।
একদিকে যেমন লুইগির সমর্থকরা তার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার, তেমনি অনেকে আবার এই ঘটনার বিভিন্ন দিক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা করছেন।
কেউ কেউ মনে করেন, এই নাটকটি সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরতে সহায়ক হবে।
চিকিৎসক রুনা রে, যিনি লুইগির মামলার শুনানিতে নিয়মিত উপস্থিত ছিলেন, তিনি জানান, স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তনের প্রত্যাশা থেকেই তিনি এখানে এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়, এই মামলাটি মানুষের মনে নাড়া দিয়েছে। একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি প্রতিদিন দেখি, কিভাবে স্বাস্থ্য বীমা সংস্থাগুলো মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে।”
বর্তমানে, লুইগির বয়স ২৭ বছর। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা কতটুকু, সেটি সময়ই বলবে।
তবে ‘লুইগি দ্য মিউজিক্যাল’ নাটকটি এরই মধ্যে দর্শক ও সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন