যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে মিনেসোটা রাজ্যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) ব্যবহার করে অনুমতি ছাড়া আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও তৈরি করার প্রবণতা বাড়ছে।
এই ধরনের ছবি তৈরি করার অ্যাপ্লিকেশন বা ওয়েবসাইটগুলিকে ‘নুডিফাই’ অ্যাপ (Nudify app) বলা হচ্ছে, যা ব্যবহার করে যে কেউ সামান্য কয়েকটি ছবি আপলোড করে সেই ব্যক্তির আপত্তিকর ছবি তৈরি করতে পারে।
এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে সেখানকার সরকার এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ করতে নতুন আইন তৈরির কথা ভাবছে।
মিনেসোটার এই প্রস্তাবিত আইনের মূল উদ্দেশ্য হল, যে সকল কোম্পানি এই ধরনের ‘নুডিফাই’ অ্যাপ তৈরি করে বা তাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের ছবি তৈরি করতে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
প্রস্তাব অনুযায়ী, যদি কোনও কোম্পানি মিনেসোটা রাজ্যের ব্যবহারকারীদের জন্য এই ধরনের পরিষেবা বন্ধ করতে না পারে, তবে তাদের প্রত্যেকটি অবৈধ ব্যবহারের জন্য প্রায় ৫ লক্ষ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।
এই ঘটনার শিকার হওয়া একজন নারী, মলি কেলি (Molly Kelley), জানিয়েছেন যে, তিনি জানতে পারেন তার পরিচিত কেউ সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত তার পারিবারিক ছবি ব্যবহার করে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত এবং যৌনতামূলক ভিডিও তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, এই একই ব্যক্তি আরও প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ জন নারীর ছবি ব্যবহার করে একই কাজ করেছে, যাদের অধিকাংশই মিনেসোটার বাসিন্দা।
শুধু মিনেসোটা নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারও এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সক্রিয় হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো শহরে কয়েকটি ‘নুডিফাই’ ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এছাড়াও, মার্কিন সিনেটে একটি বিল আনা হয়েছে, যেখানে অনুমতি ছাড়া তৈরি হওয়া যৌনতামূলক ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করাকে ফেডারেল অপরাধ হিসেবে গণ্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই বিল অনুযায়ী, সামাজিক মাধ্যমগুলিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই ধরনের আপত্তিকর ছবি সরানোর নির্দেশ দেওয়া হবে।
আইন বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সতর্ক করে বলেছেন, প্রস্তাবিত এই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের মৌলিক অধিকার, বিশেষ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী হতে পারে।
কারণ, এই আইনে শুধুমাত্র ছবি তৈরি করা বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে, যা একটি জটিল বিষয়।
বাংলাদেশেও প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
তাই, এই ধরনের ‘নুডিফাই’ অ্যাপের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং এর থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সেই সঙ্গে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে আরও শক্তিশালী করা দরকার, যাতে এই ধরনের অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত আইনি সহায়তা দেওয়া যায়।
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস