ড্রাইভারবিহীন ট্যাক্সি পরিষেবা নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে উবার, যা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। সম্প্রতি, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রাইড-শেয়ারিং পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানি উবার, স্বয়ংক্রিয় গাড়ি প্রযুক্তির অগ্রদূত কোম্পানি ওয়েমোর (Waymo)-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে টেক্সাসের অস্টিন শহরে তাদের এই নতুন পরিষেবা চালু করতে যাচ্ছে।
এই চুক্তির ফলে অস্টিনের যাত্রীরা উবারের অ্যাপ ব্যবহার করে চালকবিহীন ট্যাক্সি বুক করতে পারবেন। ওয়েমোর এর আগে ফিনিক্স, সান ফ্রান্সিসকো এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে তাদের নিজস্ব অ্যাপের মাধ্যমে এই পরিষেবা চালু করেছে এবং বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। এইবার তারা উবারের সাথে মিলিত হয়ে তাদের কার্যক্রম আরও বড় পরিসরে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
উবারের এই পদক্ষেপের ফলে, অদূর ভবিষ্যতে উন্নত বিশ্বের শহরগুলোর মতো বাংলাদেশেও হয়তো স্বয়ংক্রিয় গাড়ি বা চালকবিহীন ট্যাক্সি পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। যদিও বাংলাদেশে এই ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার এখনো অনেক দূরের বিষয়, তবে উন্নত বিশ্বে এর অগ্রগতি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে, অস্টিনে উবারের সাধারণ ট্যাক্সি পরিষেবাও চালু থাকবে, তবে স্বয়ংক্রিয় গাড়ির এই নতুন সংযোজন যাত্রীদের জন্য ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে। যাত্রীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী চালকবিহীন অথবা চালক-সংবলিত গাড়ির মধ্যে একটি বেছে নিতে পারবেন। উবার কর্তৃপক্ষের মতে, ওয়েমোর-এর উন্নত প্রযুক্তি এবং উবারের শক্তিশালী প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ে তারা একটি যুগান্তকারী পরিষেবা নিয়ে আসতে প্রস্তুত।
উবারের প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি, লিফটও (Lyft) আটলান্টায় একই ধরনের পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করছে। এছাড়াও, অন্যান্য অনেক কোম্পানিও এই খাতে বিনিয়োগ করছে। এই প্রতিযোগিতা প্রমাণ করে যে, স্বয়ংক্রিয় গাড়ির বাজার খুব দ্রুত বাড়ছে।
ওয়েমোর-এর সাফল্যের একটি বড় কারণ হল, তারা এখন পর্যন্ত কোনো বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়নি। তাদের স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি পরিষেবা দিনে প্রায় ২ লক্ষবার যাত্রী পরিবহন করে থাকে। এই পরিসংখ্যান তাদের প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্যতা প্রমাণ করে।
এই প্রযুক্তি যদি সফলভাবে বিস্তার লাভ করে, তবে এটি বাংলাদেশের পরিবহন খাতেও পরিবর্তন আনতে পারে। যানজট নিরসন, সড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং যাত্রী সেবার মান উন্নত করতে স্বয়ংক্রিয় গাড়ির ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। তবে, এর পাশাপাশি, চালকদের কর্মসংস্থান নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে, আমাদের নীতি-নির্ধারকদেরও এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: Associated Press