যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে স্কুল এলাকার কাছাকাছি স্বয়ংক্রিয় গতি ক্যামেরা বসানো নিয়ে বিতর্ক চলছে।
কিছু আইনপ্রণেতা এই ক্যামেরাগুলো একেবারে নিষিদ্ধ করার পক্ষে, তাঁদের যুক্তি হলো, এগুলো মূলত রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয় এবং এতে অনেক ক্ষেত্রে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, কেউ কেউ চান ক্যামেরা থাকুক, তবে সেগুলোর কার্যকারিতা আরও সুসংহত করা হোক, যাতে তা নিরাপত্তা বিধানে আরও বেশি কাজে লাগে।
জর্জিয়ার আইনসভায় বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
অঙ্গরাজ্যের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন, ক্যামেরার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করা হচ্ছে, যা উদ্বেগের বিষয়।
তাঁদের মতে, অনেক সময় এমন ঘটনাও ঘটেছে, যখন ক্যামেরার ফ্ল্যাশ লাইট ছিল না, অথবা শিশুদের স্কুল টাইমের বাইরেও গাড়ির গতির ছবি তোলা হয়েছে।
এছাড়া, যারা সময়মতো জরিমানা পরিশোধ করতে পারেন না, তাঁদের গাড়ির নিবন্ধন নবায়ন করতে সমস্যা হয়।
অন্যদিকে, ক্যামেরা সমর্থনকারীদের যুক্তি হলো, এটি সড়কের নিরাপত্তা বাড়াতে সহায়ক।
ডেকাটুর শহরের মেয়র প্যাটি গ্যারেট বলেন, ক্যামেরার কারণে স্কুলের আশেপাশে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
তাঁর মতে, এই ক্যামেরাগুলো বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক শিক্ষার্থী হেঁটে বা বাইকে করে স্কুলে যায়।
এছাড়া, এই ক্যামেরা বসানোর পর থেকে ডেকাটুরে গাড়ির গতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
জর্জিয়া রাজ্যে ২০১৮ সাল থেকে স্কুল এলাকার আশেপাশে গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্যামেরা ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে।
তবে সম্প্রতি, অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় এই ক্যামেরাগুলো নিষিদ্ধ করা বা সেগুলোর কার্যকারিতা নতুন করে নির্ধারণ করার বিষয়ে দুটি ভিন্ন বিল উত্থাপিত হয়েছে।
একটি বিলে ক্যামেরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে, আর অন্যটিতে ক্যামেরার ব্যবহার আরও সুসংহত করার কথা বলা হয়েছে।
ক্যামেরার বিরোধীপক্ষের যুক্তি হলো, এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ও ক্যামেরা নির্মাণকারী সংস্থাগুলো লাভবান হচ্ছে।
এই কোম্পানিগুলো বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারেও অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে।
যেমন, রেডস্পিড ও ব্লু লাইন সলিউশনস নামের দুটি কোম্পানি জর্জিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রচারের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়েছে।
তবে ক্যামেরার পক্ষে থাকা আইনপ্রণেতাদের দাবি, এর মূল উদ্দেশ্য হলো শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তাঁরা মনে করেন, ক্যামেরার ব্যবহার সীমিত করা এবং ভালোভাবে সতর্কতামূলক চিহ্ন স্থাপন করা হলে চালকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
ডেকাটুরের পুলিশ প্রধান স্কট রিচার্ডস জানিয়েছেন, ক্যামেরার কারণে ডেকাটুরে গাড়ির গতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
বর্তমানে, জর্জিয়ার আইনসভায় এই দুটি প্রস্তাবের ওপর আলোচনা চলছে।
এর ফলে ক্যামেরার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
তবে বিষয়টি সড়ক নিরাপত্তা এবং রাজস্ব আদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস