1. [email protected] : adminb :
  2. [email protected] : Babu : Nurul Huda Babu
March 14, 2025 12:14 AM
সর্বশেষ সংবাদ:
আতলেটিকো বিতর্ক: ভিএআর কি সমাধান নাকি উদ্বেগের কারণ? এলোন মাস্কের মন্তব্যে জীবননাশের হুমকি, কেঁদে ফেললেন অভিনেত্রী! স্বাস্থকর রুটি বানানোর সহজ উপায়: ঘরেই তৈরি করুন পারফেক্ট বেকিং কিট! আলভারেজের পেনাল্টি নিয়ে বিতর্কের ঝড়, নিয়ম বদলের পথে উয়েফা! ফ্রাঙ্কি দেতোরির জীবনে মহা বিপর্যয়! দেউলিয়া হওয়ার ঘোষণা! আহা! গুয়াতেমালার এই শহরের খাবারে লুকিয়ে আছে কোন রহস্য? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র গরম: বাড়ছে মৃত্যু, এখনই সাবধান! ট্রাম্পের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত: সরকারি কর্মীদের অপসারণে কি ধ্বংসের খেলা? আতঙ্কে ডলার জেনারেল! কম আয়ের মানুষের জীবনে কি ভয়াবহ বিপদ? ফেসবুকে ফিরছে ফ্যাক্ট-চেকিং? মেটা’র নতুন চমক!

ভিয়েতনামের প্রবাল: ডুবছে জীবন, রক্ষার আশা?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Wednesday, March 5, 2025,

ভিয়েতনামের উপকূলবর্তী প্রবাল প্রাচীর: ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, ভবিষ্যৎ বাঁচাতে পারবে কি?

ভিয়েতনামের উপকূল জুড়ে থাকা প্রবাল প্রাচীরগুলো এখন এক গভীর সংকটের সম্মুখীন। এক সময়ের প্রাণবন্ত সমুদ্র আজ যেন ধীরে ধীরে তার আকর্ষণ হারাচ্ছে। পর্যটকদের আনাগোনা এখনো আছে, কিন্তু আগের মতো মাছের দেখা পাওয়া যায় না। সেখানকার জেলেদের জীবন-জীবিকাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

নহা ট্রাং-এর উপকূলের কাছে অবস্থিত প্রবাল প্রাচীরগুলো একসময় নানা প্রজাতির মাছের আবাসস্থল ছিল। এখানকার জেলেরা এক রাতে ৭০ কেজি পর্যন্ত মাছ ধরতেন। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এখন সেখানে শুধু স্কুইড পাওয়া যায়। স্থানীয় জেলে বিন ভান জানান, আগে যেখানে টুনা ও গ্রুপারের মতো মাছ পাওয়া যেত, সেখানে এখন মাছের দেখা পাওয়া কঠিন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবাল প্রাচীরগুলি বিশ্বের মোট প্রবাল প্রাচীরের এক-তৃতীয়াংশ এবং ‘কোরাল ট্রায়াঙ্গেল’-এর অংশ। এই অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি, যা ফিলিপাইন থেকে ইন্দোনেশিয়া হয়ে সলোমন দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে, এখানকার অধিকাংশ প্রবাল প্রাচীর এখন ধ্বংসের পথে। বিশ্ব সম্পদ ইনস্টিটিউট এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভিয়েতনামের মাত্র ১ শতাংশ প্রবাল প্রাচীর এখনো পর্যন্ত সুস্থ অবস্থায় আছে।

ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং সমুদ্রের অম্লতা বৃদ্ধির কারণে প্রবাল প্রাচীরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রবালগুলি তাদের মধ্যে থাকা শৈবাল (algae) হারাচ্ছে, যা তাদের বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একবার যদি প্রবাল সাদা হয়ে যায় (bleaching), তবে তাদের পুনরুদ্ধার হতে এক বছরের বেশি সময় লাগে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ঘটনা এখন ঘন ঘন ঘটছে।

নহা ট্রাং-এর প্রবাল প্রাচীরগুলি স্থানীয় কিছু সমস্যার সঙ্গেও লড়ছে। ভিয়েতনামের অর্থনীতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে উপকূলীয় শহরগুলোতে ব্যাপক হারে নির্মাণ কাজ চলছে। এর ফলে সৃষ্ট পলি প্রবালের ক্ষতি করছে। কৃষি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং মৎস্য চাষের কারণে সৃষ্ট দূষণ শৈবালের বৃদ্ধি ঘটায়, যা সূর্যের আলো আটকে দেয় এবং প্রবালের শ্বাসরোধ করে। অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে প্রবাল প্রাচীরের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় মাছগুলোও আজ বিলুপ্তির পথে। এমনকি ২০১৫ সালে এক ধরনের কাঁটাযুক্ত তারা মাছের (starfish) আক্রমণে প্রায় ৯০ শতাংশ প্রবাল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

প্রবাল প্রাচীর ধ্বংসের ফলে শুধু মৎস্যজীবীদের জীবিকা নির্বাহ করাই কঠিন হয়ে পড়েনি, বরং পর্যটন শিল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পর্যটকদের কাছে ভিয়েতনামের দীর্ঘ উপকূলরেখা বরাবর থাকা সমুদ্রের সৌন্দর্য এক অন্যতম আকর্ষণ। কিন্তু বর্তমানে সেখানে বোতল, মাছ ধরার জাল এবং প্লাস্টিকের মতো বর্জ্য দেখা যায়।

পর্যটকদের মধ্যে যারা সমুদ্রের গভীরে ডুব দেন, তাদের অনেকেই বর্জ্য সংগ্রহে অংশ নিচ্ছেন। তারা জানান, পর্যটনের কারণে সৃষ্ট বর্জ্যই এখানে বেশি। পর্যটকদের অসচেতনতার কারণে এই ধরনের পরিবেশ দূষণ বাড়ছে।

টেকসই পর্যটন ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে পর্যটন এবং প্রবাল প্রাচীর—দুটোই রক্ষা করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, পর্যটনের মাধ্যমে সামুদ্রিক সংরক্ষণ এবং প্রবাল পুনরুদ্ধারের বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে। তবে, অতিরিক্ত পর্যটক এবং অপরিকল্পিত নির্মাণ প্রবালের জন্য ক্ষতিকর।

ভিয়েতনামের সরকার পর্যটনকে টেকসই করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। ২০০১ সালে, তারা তাদের প্রথম সমুদ্র সুরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে, যার আয়তন ছিল ১৬০ বর্গকিলোমিটার। কিন্তু এরপরও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, অতিরিক্ত পর্যটন এবং উপকূলীয় অঞ্চলে অপরিকল্পিত নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ সামুদ্রিক পার্কগুলোতে মাছ ধরা বন্ধ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু এখনও অনেক জায়গায় তা নিয়মিতভাবে মানা হচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিয়েতনামের সরকার আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন – আরও বেশি সমুদ্র পার্ক তৈরি করা, উপকূলের গাছপালা পুনরুদ্ধার করে সমুদ্রে পলির প্রবেশ কমানো, ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাল প্রাচীরগুলো পুনরুদ্ধার করা এবং মৎস্য শিকারের নিয়ম তৈরি করা।

ভিয়েতনামের জন্য তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য টিকিয়ে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দেশটি এই মুহূর্তে পর্যটন থেকে প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে তারা ২৩ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক এবং ১২০ মিলিয়নের বেশি অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের আকর্ষণ করতে চাইছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT