ইউক্রেন যুদ্ধ: আলোচনার টেবিলেই সমাধান চান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে ইউক্রেন যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সম্প্রতি, সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুরুর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন যে ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো সামরিক সমাধান নেই। আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ককে পুনরায় স্বাভাবিক করা। এই আলোচনায় ইউক্রেনের প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন।
আলোচনার প্রেক্ষাপট
এই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ, আন্দ্রি ইয়ারমাক। জানা গেছে, আলোচনাটি সৌদির বন্দর নগরী জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হবে। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি এই আলোচনার ফলপ্রসূ সমাধান প্রত্যাশা করেন। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
মার্কো রুবিও জোর দিয়ে বলেছেন, শান্তি আলোচনার জন্য ইউক্রেনকে কিছু কঠিন পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি আরও জানান, রাশিয়াও সম্ভবত তাদের অবস্থান থেকে সহজে সরবে না। উভয় পক্ষকেই বুঝতে হবে যে, সামরিক উপায়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। রাশিয়া হয়তো পুরো ইউক্রেন জয় করতে পারবে না, আবার ইউক্রেনের পক্ষেও স্বল্প সময়ে ২০১৪ সালের আগের অবস্থানে ফেরা কঠিন হবে।
আলোচনার বিষয়
আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান নিয়ে আলোচনা। এছাড়াও, খনিজ সম্পদ বিষয়ক একটি চুক্তি নিয়েও কথা হতে পারে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সামরিক সহায়তা পুনরায় শুরু করার আগে ইউক্রেনকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে কিছু অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার মতো বিষয়ও থাকতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা
আগে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, এখন তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ইউক্রেন যদি কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেয়, তাহলে সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান পুনরায় শুরু করা যেতে পারে।
ইউরোপীয় দেশগুলোর সমর্থন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থার মধ্যে ইউক্রেন ইউরোপীয় দেশগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সহায়তা পুনরায় শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী।
যুদ্ধ পরিস্থিতি
বর্তমানে, ইউক্রেনীয় সেনাদের উপর চাপ বাড়ছে। রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং পূর্বে তারা বেশ কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান