মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কর্মীর সংখ্যা কমানোর একটি বিতর্কিত পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং এর ফলস্বরূপ জনগণের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খবরটি প্রকাশ করেছে সিএনএন।
বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের মূলে রয়েছেন ‘পার্টনারশিপ ফর পাবলিক সার্ভিস’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাক্স স্টিয়ার। তিনি মনে করেন, সরকারি কর্মকর্তাদের ছাঁটাইয়ের এই প্রক্রিয়াটি সুপরিকল্পিত নয়। বরং এটি অনেকটা “রেডি, এম, ফায়ার”-এর পরিবর্তে “ফায়ার, ফায়ার, ফায়ার”-এর মতো। তার মতে, সরকার জনগণের সম্পদ এবং এই ধরনের পদক্ষেপ ‘একটি পাবলিক অ্যাসেটের অগ্নিসংযোগের’ সামিল।
কর্মকর্তা ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হলো ‘বৈচিত্র্য, সাম্য ও অন্তর্ভুক্তি’ (Diversity, Equity, and Inclusion – DEI) কর্মসূচি বাতিল করা। তবে ম্যাক্স স্টিয়ারের মতে, এই পরিবর্তনের সঙ্গে DEI-এর সম্পর্ক খুবই সামান্য। তিনি জানান, মূলত নতুন কর্মীদের, বিশেষ করে প্রবেশনারি কর্মীদের ছাঁটাই করা হচ্ছে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই। এমনকি যারা সরকারের অপচয়, দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে কাজ করেন, সেই সব ইন্সপেক্টর জেনারেলদেরও (Inspector General) বাদ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বিশেষ পরামর্শক অফিসের প্রধানকেও সরানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, কর্মীদের এভাবে ছাঁটাই করার ফলে সরকারের কার্যকারিতা হ্রাস পাবে এবং এর ফলে জনগণের অর্থেরও অপচয় হবে। কারণ, কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং নতুন করে কর্মী নিয়োগ করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হবে, যা কার্যত কোনো কৌশলগত কারণ ছাড়াই করা হচ্ছে।
এছাড়াও, এই ঘটনার সঙ্গে এলন মাস্কের (Elon Musk) জড়িত থাকার বিষয়টিও সমালোচিত হচ্ছে। ম্যাক্স স্টিয়ারের মতে, কোনো বেসরকারি ব্যক্তির সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এত বেশি প্রভাব বিস্তারের নজির আগে দেখা যায়নি। এলন মাস্কের আর্থিক স্বার্থের কারণে সরকারি নীতি নির্ধারণে স্বচ্ছতার অভাব দেখা যাচ্ছে, যা জনস্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে।
বর্তমানে, কর্মীদের ছাঁটাই এবং সরকারি কার্যক্রমের পরিবর্তনের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের অস্বচ্ছতা আমেরিকার নাগরিকদের জন্য উদ্বেগের কারণ। কংগ্রেসের উচিত এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সরকারের কাছ থেকে চাওয়া, যা জনগণের জানার অধিকার রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন