গাজায় সামরিক অভিযানে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মানবShield হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
মঙ্গলবার রাতে সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের সেনারা গাজায় অভিযান চালানোর সময় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের সামরিক কাজে ব্যবহার করেছে—এমন ‘যুক্তিযুক্ত সন্দেহ’ রয়েছে।
সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো এমন অভিযোগের কথা স্বীকার করা হলো।
সিএনএন এর আগে খবর প্রকাশ করেছিলো, ইসরায়েলি সেনারা তাদের সৈন্যদের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের সম্ভাব্য ফাঁদ পাতা ঘর ও টানেলে প্রবেশ করতে বাধ্য করেছে।
আইডিএফ আরও জানায়, সামরিক পুলিশ ক্রাইমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন বেশ কয়েকটি ঘটনায় ফিলিস্তিনিদের সামরিক মিশনে ব্যবহারের ‘যুক্তিযুক্ত সন্দেহ’ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে।
তবে, ঠিক কতটি তদন্ত খোলা হয়েছে, অথবা কাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রাজি হয়নি তারা।
আইডিএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘তদন্ত এখনো চলমান, তাই এই মুহূর্তে অন্য কোনো তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।’
গত বছরের শেষের দিকে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক ইসরায়েলি সেনা জানান, তার ইউনিট এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে সৈন্যদের আগে একটি ভবনে প্রবেশ করতে বাধ্য করেছিল।
ওই সেনা বলেন, ‘যদি কোনো ফাঁদ থাকে, তবে তারা বিস্ফোরিত হবে, আমাদের কিছু হবে না।’
অভিযোগ রয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীতে এই ধরনের ঘটনা এতটাই সাধারণ ছিল যে এর একটি নামও দেওয়া হয়েছিল: ‘মশা প্রটোকল’।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দ্বারা এই ধরনের কাজের সঠিক পরিমাণ ও ব্যাপ্তি এখনো জানা যায়নি।
তবে, গত বছর ওই সেনা এবং পাঁচজন বেসামরিক নাগরিকের সাক্ষ্য অনুযায়ী, গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি, খান ইউনিস ও রাফাসহ পুরো এলাকা জুড়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
মোহাম্মদ সাদ নামের ২০ বছর বয়সী এক বেসামরিক নাগরিক সিএনএনকে জানান, আইডিএফ সেনারা তাকে রাফায় আটক করে।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের বলত কার্পেট সরাতে, বলত তারা টানেল খুঁজছে। তারা বলত, সিঁড়ির নিচে ফিল্ম করো।
যদি কিছু পাওয়া যেত, তবে তারা আমাদের বাইরে নিয়ে আসতে বলত।
যেমন, তারা আমাদের ঘর থেকে জিনিসপত্র সরাতে, ঘর পরিষ্কার করতে, সোফা সরাতে, ফ্রিজ ও আলমারি খুলতে বলত।’
সিএনএনের অক্টোবর মাসের প্রতিবেদনে আইডিএফ জানিয়েছিল, সামরিক প্রটোকল ‘সামরিক অপারেশনের জন্য আটক গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে’।
তথ্য সূত্র: সিএনএন