ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ESA)-এর একটি নভোযান, ‘হেরা’, বর্তমানে দুটি গ্রহাণু লক্ষ্য করে এগিয়ে যাচ্ছে।
এই যাত্রাপথে, যানটি মঙ্গল গ্রহের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ছবি তুলেছে, যার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণ ছিল মঙ্গলের একটি ছোট এবং রহস্যময় চাঁদ, ডেইমোস।
ডেইমোস, আকারে প্রায় ১৩ কিলোমিটার বিস্তৃত, মঙ্গল গ্রহের দুটি চাঁদের মধ্যে একটি। অন্য চাঁদটির নাম ফোবোস, যা প্রায় ২২ কিলোমিটার বিস্তৃত। বিজ্ঞানীরা ডেইমোসের গঠন ও উৎপত্তি নিয়ে এখনো নিশ্চিত নন।
ধারণা করা হয়, এটি হয়তো মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে কোনো বিশাল সংঘর্ষের ফল, অথবা গ্রহটির মাধ্যাকর্ষণের কারণে আকৃষ্ট হওয়া কোনো গ্রহাণু।
‘হেরা’ মহাকাশযানটি ঘণ্টায় প্রায় ৩২ হাজার কিলোমিটার গতিতে মঙ্গল গ্রহের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ডেইমসের ছবি তোলে।
ছবি তোলার সময় ডেইমোস থেকে এর দূরত্ব ছিল প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার। এই অভিযানে ব্যবহৃত বিশেষ যন্ত্রগুলি, যা ছবি তোলার কাজে সহায়তা করেছে, এর আগে পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরুর সময়ও পরীক্ষা করা হয়েছিল।
তবে কোনো দূরবর্তী, ছোট আকারের চাঁদের ছবি এই প্রথম তোলা হলো, যা বিজ্ঞানীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ছবিতে মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের কিছু পরিচিত স্থানও দেখা গেছে, যেমন – টেরা সাবিয়া অঞ্চল, যা গ্রহটির নিরক্ষরেখার কাছে অবস্থিত। এছাড়াও, রয়েছে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার প্রশস্ত হিউজেন খাদ এবং শিয়াপারেলি নামের একটি বৃহৎ গর্ত।
এমনকি সৌরজগতের অন্যতম বৃহৎ আঘাত সৃষ্টিকারী গর্ত, হেল্লাস বেসিনও ছবিতে দৃশ্যমান।
‘হেরা’র প্রধান লক্ষ্য হলো – ‘ডিডিমোস’ নামক একটি বৃহৎ গ্রহাণুর কাছাকাছি থাকা ‘ডিমোরফস’ নামের একটি ছোট গ্রহাণুকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে নাসা’র ‘ডার্ট’ নামের একটি মহাকাশযান ডিমোরফসের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটিয়েছিল, যা মহাকাশে গ্রহাণু ধ্বংসের একটি পরীক্ষা ছিল। ‘হেরা’ এই ডিমোরফস নিয়ে গবেষণা করে দেখবে, ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা কোনো গ্রহাণুকে এ ধরনের সংঘর্ষের মাধ্যমে প্রতিহত করা সম্ভব কিনা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান