জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিশ্বজুড়ে মুসলিম বিদ্বেষের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
তিনি ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সরকারগুলোকে এবং ঘৃণা ভাষণ নিয়ন্ত্রণে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধ দিবসে (১৫ই মার্চ) দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।
গুতেরেস বলেন, “আমরা মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি দেখছি। মানবাধিকার ও মর্যাদাহানিকর জাতিগত বিভাজন এবং বৈষম্যমূলক নীতি থেকে শুরু করে ব্যক্তি ও উপাসনালয়ের ওপর সরাসরি সহিংসতা পর্যন্ত এর বিস্তার ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, “এটি অসহিষ্ণুতা, চরমপন্থীideology এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর হামলার একটি বৃহত্তর সমস্যার অংশ।”
জাতিসংঘের মহাসচিব বিশেষভাবে কোনো দেশের কথা উল্লেখ না করে সরকারগুলোকে সামাজিক সংহতি বাড়ানো এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানান।
তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ঘৃণা ও হয়রানি বন্ধ করার এবং সবার প্রতি বিদ্বেষ, জাতিবিদ্বেষ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি- জেনারেল মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল মোরাতিনোস উল্লেখ করেন যে মুসলমানরা বর্তমানে “প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য ও আর্থ-সামাজিক সীমাবদ্ধতা”র শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, “এই ধরনের পক্ষপাতিত্ব মুসলমানদের ওপর অপবাদ এবং অন্যায় জাতিগত বিভাজনে প্রকাশিত হয়। সেই সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক নেতার ইসলামবিরোধী বক্তব্য ও নীতির মাধ্যমে এটি আরও শক্তিশালী হচ্ছে।”
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে ইসলামোফোবিয়া, আরব-বিদ্বেষ এবং ইহুদি বিদ্বেষ বেড়েছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
অনেক ফিলিস্তিনপন্থী কর্মী, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোতে, অভিযোগ করেছেন যে ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে তাদের সমর্থনকে তাদের সমালোচকরা হামাসের প্রতি সমর্থন হিসেবে ভুলভাবে চিহ্নিত করছেন।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মতো দেশগুলোতে মুসলিমবিদ্বেষী ঘৃণামূলক ঘটনা ও বক্তব্যের রেকর্ড পরিমাণ তথ্য প্রকাশ করেছে।
উদাহরণস্বরূপ, ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস’ (CAIR) কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর মুসলিম ও আরব-বিরোধী ঘটনার ৮,৬৫৮টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যা ১৯৯৬ সাল থেকে সংস্থাটির তথ্য সংগ্রহের শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ।
এই সংখ্যাটি আগের বছরের তুলনায় ৭.৪ শতাংশ বেশি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা