1. [email protected] : adminb :
  2. [email protected] : Babu : Nurul Huda Babu
March 16, 2025 4:12 AM
সর্বশেষ সংবাদ:
এলোন মাস্কের বিতর্কিত ভূমিকার প্রতিবাদে রাস্তায় নামল জনতা! নেটফ্লিক্সের ‘মিথ্যাচারে’ ক্ষোভ, মুখ খুললেন ল্যান্ডো নরিস! যুদ্ধকালীন আইনের আশ্রয় ট্রাম্পের! ৫ ভেনেজুয়েলার নাগরিককে বিতাড়িত করার নির্দেশ গুরুতর অসুস্থ পোপের সুস্থতার লক্ষণ, চলছে গুরুত্বপূর্ণ কাজ! আতঙ্কে ইয়েমেন! ট্রাম্পের নির্দেশে হুতিদের ঘাঁটিতে ভয়ংকর আঘাত! মারো ইটোজে: সিংহের নেতা হওয়ার যোগ্য! নরগার্ডের গোলে ইউরোপের আশা শেষ! বোর্নমাউথকে হারিয়ে দিলো ব্রেন্টফোর্ড ইয়েমেনে হাউছিদের ওপর ট্রাম্পের সামরিক অভিযান: ভয়াবহ পরিণতি? রাতে মদের নেশা? ঘুমকে বিদায় জানানোর সময় হয়েছে! মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের জয়, দিল্লি ক্যাপিটালসের স্বপ্নভঙ্গ: ডব্লিউপিএল চ্যাম্পিয়ন!

গাজায় নীরব মহামারি: ফিলিস্তিনের শিশুদের বিভীষিকাময় জীবন!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Saturday, March 15, 2025,

গাজায় নীরব মহামারী: ধ্বংসস্তূপের মাঝে শিশুদের আর্তনাদ

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। একটানা বোমাবর্ষণ হয়তো আপাতত বন্ধ, কিন্তু এর ক্ষত এখনো গভীর। মাসখানেক ধরে কিছু ত্রাণ সরবরাহ করা গেলেও, তা গাজার ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য যথেষ্ট নয়। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানকার আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাঁবু টানাতে বাধ্য হচ্ছেন মানবিক কর্মীরা। বর্তমানে যে সামান্য ঔষধপত্র সরবরাহ করা হয়েছে, তাও দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।

নিরন্তর এই ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে, গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ পাচ্ছে না। এর ওপর যোগ হয়েছে বেসামরিক জনগণের স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা সংকট। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, গত ১৫ মাস ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় আহত হয়ে অঙ্গ হারানো মানুষের সংখ্যা, যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে গাজায় প্রায় ২২,৫০০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে হাত-পা হারানো, মেরুদণ্ড এবং মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক। যুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলোতে বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা ও চিকিৎসক দল জানিয়েছে, প্রতিদিন ১০ জনের বেশি শিশু একটি বা দুটি অঙ্গ হারাচ্ছিল। অস্ত্রোপচারের সময় অনেক শিশুর শরীরে অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করা যায়নি, কারণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছিল। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে শিশু অঙ্গহানির হার সবচেয়ে বেশি।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সরা। হাসপাতালে বোমা হামলায় আহত অনেক মানুষকে আমি দেখেছি। জনবল সংকট থাকায় আহত এক চার বছর বয়সী শিশু, তালাকে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। বোমা হামলায় সে তার একটি পা হারিয়েছিল। ব্যথায় কাতর হয়ে চিৎকার করছিল সে। তার মা নিজেও গুরুতর আহত হওয়ায়, মেয়ের কাছে যেতে পারছিলেন না। আমি কেবল তার ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করে কিছু ব্যথানাশক দিতে পেরেছিলাম।

এরপর, আমি আবদাল্লাহ নামে এক যুবকের সঙ্গে কথা বলি। তার অবস্থা ছিল খুবই গুরুতর। হাসপাতালে আনার পর তার অন্য পা কেটে ফেলতে হয়। তার বাবা জানান, আবদাল্লাহর পরিবারের কয়েকজন সদস্যও নিহত হয়েছে।

ডিসেম্বর মাসে আমি যখন আবার হাসপাতালে যাই, তখন সেখানে হানান ও মিস্ক নামে দুটি শিশুর সঙ্গে দেখা হয়। ইসরায়েলি হামলায় তারা তাদের মা ও একটি করে পা হারিয়েছিল। হানানের বয়স ছিল তিন বছর, আর মিস্কের এক বছর আট মাস। তাদের ফুফু তাদের দেখাশোনা করছিলেন। তিনি জানান, শিশুদের প্রতিপালন করা কতটা কষ্টের। মিস্ক যখন হাঁটতে শিখেছিল, তখনই বোমা হামলায় তার পায়ে আঘাত লাগে। হানান অন্য শিশুদের মতো তার পায়ের অভাব অনুভব করত এবং অন্যদের পা দেখে প্রশ্ন করত, কেন তার পা নেই।

গাজার শিশুদের জীবনে নেমে আসা এই বিভীষিকার গল্পগুলো হয়তো কয়েক হাজারের মধ্যে কয়েকটি। বোমা হামলায় অঙ্গ হারিয়ে তারা স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে, খেলাধুলা করতে পারে না, এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও এর গভীর প্রভাব পড়ছে।

আসলে, এই গণহত্যার আগে থেকেই গাজায় অঙ্গহীন মানুষের সংখ্যা অনেক ছিল। আগের যুদ্ধ এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হতাহতের শিকার হয়ে অনেকেই অঙ্গ হারিয়েছিলেন। তখন তাদের পুনর্বাসনের জন্য কিছু সুযোগ ছিল। হামাদ পুনর্বাসন ও কৃত্রিম অঙ্গ হাসপাতাল আহতদের কৃত্রিম অঙ্গ সরবরাহ করত। বিভিন্ন সংস্থা মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সহায়তা ও পুনর্বাসন কর্মসূচি চালাত। কিন্তু এখন সেসব কিছুই নেই। হামাদ হাসপাতালও যুদ্ধের প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যায়।

ধ্বংস হয়ে যাওয়া হাসপাতাল ও অস্থায়ী ক্লিনিকে গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসা করাই কঠিন, সেখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। রাফাহ সীমান্ত এখনো বন্ধ থাকায় আহতরা চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে পারছেন না। হাজার হাজার কৃত্রিম অঙ্গ, ক্র্যাচ ও হুইল চেয়ারের মতো সহায়ক উপকরণের জরুরি প্রয়োজন হলেও, সেগুলো গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

গাজার স্বাস্থ্যখাতে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর লেগে যাবে। যদি ইসরায়েল সম্মিলিত শাস্তিস্বরূপ ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ না করে, তবে হয়তো কিছুটা উন্নতি হবে। এই সময়ের মধ্যে অঙ্গ হারানো মানুষগুলো শুধু চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের অভাবে কষ্ট পাবে না, বরং গভীর মানসিক আঘাত বয়ে বেড়াবে। আর এটিই হবে গাজার নীরব মহামারী।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT