ডিজনি’র নতুন লাইভ-অ্যাকশন সিনেমা ‘স্নো হোয়াইট’ মুক্তি পাওয়ার আগেই যেন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। রূপকথার এই ক্লাসিক গল্পের নতুন সংস্করণটি নির্মাণ করতে গিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে, যা সিনেমাটিকে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহের পরিবর্তে তৈরি করেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন র্যাচেল জেগলার। কলম্বিয়ান বংশোদ্ভূত এই অভিনেত্রীর ‘স্নো হোয়াইট’-এর চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে ডানপন্থী মহলে তীব্র আপত্তি উঠেছে। তাদের মতে, শ্বেতাঙ্গীর চরিত্রে একজন শ্বেতাঙ্গ অভিনেত্রীর পরিবর্তে অন্য জাতিগোষ্ঠীর কাউকে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি অভিনেত্রী গ্যাল গ্যাডট-এর ‘এভিল কুইন’ চরিত্রে অভিনয় নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। গ্যাল ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন জানানোয় ফিলিস্তিনপন্থী দর্শকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
শুধু অভিনয়শিল্পী নির্বাচন নয়, সিনেমাটি নির্মাণের শুরু থেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত। ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও, একাধিকবার মুক্তির তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। সিনেমার বাজেট ২৭০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা নির্মাতাদের জন্য নতুন উদ্বেগের কারণ হয়েছে।
সিনেমাটিতে বামনদের (dwarves) চিত্রায়ণ নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। অভিনেতা পিটার ডিঙ্কলেজ এই গল্পের বামনদের উপস্থাপনকে ‘ব্যাকওয়ার্ড’ বলে মন্তব্য করেছেন। ডিজনির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বামন সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের চরিত্রগুলো সাজানোর চেষ্টা করছেন, যাতে কোনো প্রকার নেতিবাচক ধারণা তৈরি না হয়।
বিভিন্ন কারণে সিনেমাটির প্রচারণাও সীমিত করা হয়েছে। মুক্তির আগে সাধারণত যে বিশাল পরিসরে প্রচার করা হয়, এখানে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। এমনকি, মুক্তির মাত্র দুই সপ্তাহ আগে টিকিটের অগ্রিম বিক্রয় শুরু করা হয়েছে, যা সাধারণত অনেক আগে থেকেই শুরু হয়।
তবে, এতসব বিতর্কের মধ্যেও সিনেমাটি কেমন ব্যবসা করবে, সেদিকে তাকিয়ে আছে সবাই। যদিও মুক্তির প্রথম দিকে এর ব্যবসা খুব একটা ভালো হয়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনে প্রেক্ষাগৃহে তেমন কোনো বড় সিনেমা মুক্তি না পেলে ‘স্নো হোয়াইট’ ভালো করতে পারে।
রূপকথার গল্প ‘স্নো হোয়াইট’ সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচিত। এই গল্পে শুভ ও অশুভ শক্তির লড়াই, সৌন্দর্য, ঈর্ষা এবং ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে, যা বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের কাছে আজও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: The Guardian