1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
April 28, 2025 5:51 PM

গাজায় গণহত্যা: ক্ষুধার জ্বালা আর মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব নীরব?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Saturday, March 22, 2025,

গাজায় আবারও অবরুদ্ধ অবস্থা: খাদ্যাভাব ও বোমাবর্ষণে মানবিক সংকট তীব্র।

গাজা উপত্যকা, যেখানে জীবন যেন এক দুঃসহ যন্ত্রণা। একদিকে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ, অন্যদিকে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সাহায্যের অভাব—এই দুইয়ের মাঝে অসহায় ফিলিস্তিনিরা।

সম্প্রতি, রমজান মাসের প্রাক্কালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৩০ জনের বেশি, যাদের মধ্যে ১৮০ জনের বেশি শিশু। গাজার এই পরিস্থিতি আবারও বিশ্ববাসীর বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।

গাজার ১৭ বছর বয়সী কিশোর রামের কথা ভাবুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে সে সাহায্যের জন্য আকুতি জানাচ্ছে।

১৫ই মার্চ তারিখে সে জানায়, “আমার পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ, বোন। খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। এখানে সবকিছুর দাম অনেক বেশি।” এমনকি, পরদিন সে জানতে চায় তার কি হবে, কারণ তার কাছে কাল খাওয়ার মতো কিছুই নেই।

যুদ্ধ এবং অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, বর্তমানে গাজার উত্তরাঞ্চলে ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশ, যা জানুয়ারিতে ছিল ১৫.৬ শতাংশ।

অপুষ্টির কারণে এরই মধ্যে ২৩ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অপুষ্টির শিকার শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা দেখা দেয়।

রামের পরিবার এক সময় তাদের ঘর-বাড়ি ফিরে গিয়েছিল, কিন্তু সেখানেও তাদের দুর্দশা কাটেনি। ইসরায়েলি হামলায় তাদের এলাকার অবকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।

মানবিক সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে যেতে অনেক দূরের পথ পাড়ি দিতে হয়, যা অনেক সময় প্রাপ্ত সাহায্যের চেয়েও বেশি ব্যয়বহুল। বাজারে কিছু খাদ্য পাওয়া গেলেও, উচ্চমূল্যের কারণে তা কেনার সামর্থ্য তাদের নেই।

রামের বাবা যুদ্ধের আগে আহত হয়েছিলেন, ফলে পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব এখন তার উপর।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখার অভিযোগ এনেছে।

কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব, যারা মানবাধিকারের কথা বলে, তারা ইসরায়েলের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। এমনকি, কিছু দেশ নেতানিয়াহুকে আশ্রয় দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ইসরায়েলের অবরোধকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করলেও, তার নিজের সরকারই তাকে ভর্ৎসনা করেছে। গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে আকাশছোঁয়া।

অনেক ত্রাণ সংস্থা তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। রামের পরিবার এখন কোনো সাহায্য পাচ্ছে না।

পশ্চিমের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলোও ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-দুর্দশা উপেক্ষা করছে, অথবা তাদের সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছে। গাজায় খাদ্য সংকট নিয়ে তেমন কোনো খবর প্রকাশিত হয়নি।

ইসরায়েলের হামলার খবর প্রকাশিত হলেও, তা ছিল তাদের দেওয়া যুক্তির মোড়কে মোড়া। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ফিলিস্তিনিদের ধ্বংসের হুমকি দিয়েছেন, কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব থেকে এর তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে, আমাদের মনে রাখতে হবে, ফিলিস্তিনের মানুষ তাদের ন্যায়বিচারের জন্য আজও লড়াই করছে। আমাদের কণ্ঠস্বর ও কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা পরিবর্তন আনতে পারি।

আমাদের সরকারগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT