শিরোনাম: বন্ধুত্বের গল্পে মাতৃত্বের বাস্তবতা: পর্দার বাইরের জগৎ
নব্বইয়ের দশকে জনপ্রিয় হওয়া মার্কিন টিভি ধারাবাহিক ‘ফ্রেন্ডস’ (Friends)-এর গল্প এখনো অনেকের মনে গেঁথে আছে। বন্ধুত্বের এক দারুণ চিত্র ছিল এই সিরিজে। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সিরিজের কিছু বিষয় নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিশেষ করে মাতৃত্ব এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয়গুলো যেভাবে দেখানো হয়েছে, তা বাস্তবতার থেকে অনেক দূরে।
ফ্রেন্ডস-এর গল্পে দেখা যায়, সন্তান জন্ম দেওয়া যেন এক সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়েরা দ্রুত মেকআপ করে, ঝলমলে পোশাকে কফি শপে আড্ডা দিতে যায়, যেন তাদের কোনো দায়িত্ব নেই।
বাস্তব জীবনে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর একজন মায়ের শরীর এবং মানসিক অবস্থার যে পরিবর্তন হয়, তা এখানে খুঁজে পাওয়া যায় না। এমনকি, শিশুদের ভালোভাবে দেখভালের বিষয়টিও যেন এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টেলিভিশন অনুষ্ঠানে মাতৃত্বের চিত্র বদলেছে। এখনকার অনেক অনুষ্ঠানে মাতৃত্ব, সন্তান জন্ম দেওয়া এবং শিশুদের প্রতিপালনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়।
মায়েরা তাদের ক্লান্ত মুখ নিয়ে সন্তানের দেখাশোনা করে, শিশুদের কান্না শোনা যায়, এমনকি তারা সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতেও পারে না। এই পরিবর্তন সম্ভবত এসেছে, কারণ এখন নারীরাও এই ধরনের অনুষ্ঠান তৈরিতে বেশি যুক্ত হচ্ছেন।
তারা তাদের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধি থেকে গল্প বলছেন, যা দর্শকদের কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে।
আগেকার দিনের টিভি অনুষ্ঠানে মাতৃত্ব এবং শিশুদের প্রতিপালনের ধারণা ছিল একরকম, যা হয়তো অনেক দর্শকের কাছে আকর্ষণীয় ছিল। তবে বর্তমানে, দর্শক বাস্তবতার কাছাকাছি গল্প দেখতে চায়।
বইয়ের পাতায় মাতৃত্বের যে গভীরতা ও জটিলতা ফুটিয়ে তোলা হয়, অনেক সময় তা টিভি পর্দায় দেখা যায় না।
লেখকের কথায়, বাস্তব মায়েদের জীবনযাত্রা পর্দায় তুলে ধরা হলে, তা দর্শকদের আরও বেশি আকৃষ্ট করবে।
ফ্রেন্ডস-এর মতো জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে মাতৃত্বের এই ত্রুটিপূর্ণ চিত্র হয়তো নিছক একটি কল্পনাবাদী উপস্থাপনা ছিল।
তবে, বর্তমান সময়ের দর্শকদের রুচি এবং চাহিদার পরিবর্তনের কারণে, নির্মাতারা এখন মাতৃত্ব এবং শিশুদের প্রতিপালনের আরও বাস্তবসম্মত চিত্র তুলে ধরতে আগ্রহী হচ্ছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান