বিখ্যাত ফরাসি অভিনেতা জেরার্ড দেপার্দিয়ু-র বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিচার চলছে। আদালতে অভিনেতা স্বীকার করেছেন যে তিনি এক নারীকে, যিনি তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন, নিতম্বে ধরেছিলেন। তবে তিনি এই ঘটনাকে নিগ্রহ হিসেবে মানতে নারাজ।
দেপার্দিয়ু’র দাবি, মেজাজ খারাপ থাকার কারণে তিনি এমন মন্তব্য করেছিলেন।
জানা গেছে, ৭৬ বছর বয়সী দেপার্দিয়ুর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন নারী যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। যদিও অভিনেতা বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। এই প্রথম কোনো মামলার শুনানিতে তিনি অভিযুক্ত হিসেবে বিচারের সম্মুখীন হচ্ছেন।
আদালতে জেরার্ড দেপার্দিয়ু জানান, “আমি তার নিতম্ব ধরেছিলাম।” অভিযোগকারী নারীর নাম অ্যামেলি কে, যিনি সিনেমার সেট ডেকোরেটর হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার কথা শুরুতে পুলিশের কাছে গোপন করেছিলেন বলেও জানান দেপার্দিয়ু।
তবে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি তাকে ধরেছিলাম, যাতে পিছলে না যাই। কারণ আমি খুব অস্থির ছিলাম। শুটিংয়ের শেষ দিকে শুক্রবার ছিল সেটি, আর আমি খুব ক্লান্ত ছিলাম।”
আদালতে বক্তব্য দেওয়ার সময় কিছুটা বিভ্রান্ত ও অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে শোনা যায় দেপার্দিয়ুকে। তিনি জানান, অ্যামেলি কে-এর কাজের ধরন নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন। এমনকি অ্যামেলিকে তিনি তার কাজের জন্য ভর্ৎসনাও করেছিলেন।
দেপার্দিয়ু আরও বলেন, “আমি কেন একজন নারীকে নিগ্রহ করব, বুঝি না।” সেই সময়ে তার শারীরিক অবস্থা এমন ছিল যে, তার বিরুদ্ধে ওঠা কিছু অভিযোগ, যেমন- অ্যামেলিকে দু’পায়ের মধ্যে রাখা, তা কার্যত অসম্ভব ছিল।
অভিযোগ, ঘটনার সময় তিনি কিছু কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও করেছিলেন। তবে তার দাবি, ওই মন্তব্যগুলো ব্যক্তিগতভাবে অ্যামেলির উদ্দেশ্যে করা হয়নি, বরং তার কাজের সমালোচনা হিসেবেই করা হয়েছিল।
যদি দেপার্দিয়ুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তাহলে তার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৭৫,০০০ ইউরোর জরিমানা হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার এই মামলার বিচার শুরু হয়েছে। প্রথমে অক্টোবর মাসে বিচার শুরুর কথা ছিল, তবে দেপার্দিয়ুর অসুস্থতার কারণে তা স্থগিত করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ২০২১ সালে ‘লে ভলেট ভার্টস’ (The Green Shutters) সিনেমার শুটিং চলাকালীন অ্যামেলি কে এবং অন্য এক নারীর (নাম প্রকাশ করা হয়নি) ওপর যৌন নিপীড়ন চালান দেপার্দিয়ু। অভিযোগ অনুযায়ী, সিনেমার সেটে অ্যামেলিকে তিনি স্পর্শ করেন, তার দিকে টেনে নেন এবং তার কোমর, নিতম্ব, স্তন ও যৌনাঙ্গে হাত দেন। একইসঙ্গে অশ্লীল কথাবার্তা বলার অভিযোগও রয়েছে।
আইনজীবীদের দাবি, ঘটনার সময় তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।
আরেক অভিযোগকারী নারীর সঙ্গেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল বলে জানা গেছে। এই মামলাটি ফ্রান্সে #মি টু আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে হওয়া সবচেয়ে আলোচিত মামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তথ্য সূত্র: The Guardian