যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনের আগে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন প্রযুক্তি বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ক। তিনি ঘোষণা করেছেন, নির্বাচনে ভোট দেওয়া কিছু ভোটারের হাতে ব্যক্তিগতভাবে ২০ লাখ ডলার তুলে দেবেন। এই ঘটনায় আমেরিকার নির্বাচন বিষয়ক আইনে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উইসকনসিনের সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনের কয়েক দিন আগে, মাস্ক তাঁর সামাজিক মাধ্যম এক্সে (X) ঘোষণা করেন, তিনি রবিবার একটি র্যালি করবেন এবং সেখানে ইতোমধ্যে ভোট দেওয়া দুজন ভোটারের প্রত্যেককে ১০ লাখ ডলার করে দেবেন। মাস্কের এই ঘোষণায় বিতর্ক আরও বেড়েছে, কারণ রাজ্যের আইন অনুযায়ী, ভোটের বিনিময়ে কোনো আর্থিক সুবিধা দেওয়া অবৈধ।
উইকন্সিন রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনটি রাজনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আদালতটির ওপর আদর্শগত নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা নির্ধারিত হবে। রিপাবলিকান দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই নির্বাচনে ব্র্যাড শিমেল নামের এক প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এমনকি শিমেলের সমর্থনে টেলিফোন সংলাপও করেছেন তিনি। ট্রাম্পের মতে, এই নির্বাচন শুধু স্থানীয় বিষয় নয়, বরং এর দিকে পুরো দেশের নজর রয়েছে।
অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন রয়েছে সুসান ক্রফোর্ডের প্রতি। রাজ্যের বর্তমান গভর্নরসহ প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট নেতারাও তাঁর পক্ষে। এই নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করবে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্তগুলো, যেমন গর্ভপাতের অধিকার, নির্বাচনী এলাকার পুনর্বিন্যাস, শ্রমিক সংগঠনগুলোর ক্ষমতা এবং ভোট দেওয়ার নিয়মকানুন। এই বিষয়গুলো ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, মাস্ক এই নির্বাচনে শিমেলকে জেতাতে ইতোমধ্যেই ২ কোটি ডলারের বেশি খরচ করেছেন। অন্যদিকে, জর্জ সোরোস নামের আরেক বিলিওনেয়ার ক্রফোর্ডকে সমর্থন করে ২০ লাখ ডলার দিয়েছেন। ইলন মাস্কের এই পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচকেরা বলছেন, তিনি সম্ভবত আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইছেন। কারণ, মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ির কোম্পানি টেসলার বিরুদ্ধে উইসকনসিন রাজ্যে একটি মামলা চলছে, যা সুপ্রিম কোর্টে নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উইসকনসিনের এই নির্বাচন এখন পর্যন্ত দেশটির বিচার বিভাগীয় নির্বাচনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল। ইতিমধ্যে এই নির্বাচনে প্রায় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার খরচ হয়েছে। যেখানে এর আগের রেকর্ড ছিল ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস