চীনের কিয়েলিয়ান পর্বতমালায় আকাশে ওড়ার সময় অপ্রত্যাশিতভাবে শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের কবলে পড়েছিলেন এক চীনা প্যারাগ্লাইডিংকারী। সৌভাগ্যক্রমে, তীব্র প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন।
এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যাওয়া প্যারাগ্লাইডিংকারী আপাতত কিছুদিনের জন্য উড়ান বন্ধ রেখেছেন।
প্যাঁং ইউজিয়াং নামের ওই ব্যক্তি চীনের গানসু প্রদেশের কিয়েলিয়ান পর্বতমালায় আকাশে ওড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি সম্প্রতি একটি পুরনো প্যারাসুট কিনেছিলেন এবং সেটির পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তিনি আকাশে ওড়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বিধি বাম! হঠাৎ করেই শক্তিশালী একটি বায়ুপ্রবাহ তাকে উপরের দিকে ছুঁড়ে মারে।
উঁচুতে উঠতে উঠতে তিনি দেখেন, চারপাশে কেবল শ্বেত মেঘের আনাগোনা। আবহাওয়ার এই আকস্মিক পরিবর্তনে তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।
তার আশেপাশে সবকিছু সাদা হয়ে গিয়েছিল, দিগ্ভ্রান্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। দিক নির্ণয়ের জন্য থাকা কম্পাসটির সাহায্য না পেলে তিনি হয়তো পথ হারিয়ে ফেলতেন।
ইউজিয়াং জানান, আকাশে ওড়ার সময় তিনি এতটাই হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন যে, প্রথমে বুঝতেই পারেননি কী হচ্ছে।
অবশেষে, প্রায় ৮,৫৯৮ মিটার (২৮,২০৮ ফুট) উচ্চতায় পৌঁছে তিনি পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
এই উচ্চতা বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের থেকেও কয়েকগুণ বেশি। তীব্র ঠান্ডার কারণে তার হাত প্রায় অবশ হয়ে গিয়েছিল।
কোনোমতে কম্পাস ও রেডিওর মাধ্যমে তিনি তার সঙ্গীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সক্ষম হন এবং ধীরে ধীরে অবতরণের চেষ্টা করেন।
অবশেষে, মেঘ ভেদ করে যখন তিনি নিচে নামতে শুরু করেন, তখন তার মনে আনন্দের ঢেউ লাগে। ইউজিয়াং বলেন, “আমি নিশ্চিত ছিলাম, আমি বাঁচব।
তবে সবচেয়ে ভয়ের মুহূর্ত ছিল যখন আমি দ্রুত অবতরণের চেষ্টা করছিলাম এবং পারিনি।
তিনি আরও জানান, আকাশে ওড়ার অভিজ্ঞতা তাকে বেশ নাড়া দিয়েছে। আপাতত কিছুদিনের জন্য তিনি আর আকাশে ওড়ার কথা ভাবছেন না।
প্যাঁং ইউজিয়াংয়ের প্যারাসুটিংয়ের চার বছরের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি একজন বি-লেভেল সার্টিফায়েড প্যারাগ্লাইডিংকারী।
সাধারণত, এই স্তরের সনদ পেতে একজন প্যারাগ্লাইডিংকারীকে কমপক্ষে ২০ দিনের ফ্লাইট অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
তথ্য সূত্র: CNN