প্রায় এক শতাব্দী আগের এক কান্ড! যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনা সম্প্রতি আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ১৯৩০-এর দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রদল, সেখানকার একটি ঘড়ির কাঁটা চুরি করে, তার বদলে বসিয়েছিল কার্ডবোর্ডের তৈরি একটি নকল কাঁটা।
সেই ঘটনার মূল হোতাদের একজন, জিওফ্রে হান্টার বেকারের মেয়ে, ট্রিক্সি বেকার, বাবার মৃত্যুর পর পাওয়া আসল কাঁটাটি সম্প্রতি ফিরিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গনভিল অ্যান্ড কাইয়াস কলেজে।
কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে এর অন্তর্ভুক্ত কলেজগুলো, শিক্ষা ও ঐতিহ্যের দিক থেকে সারা বিশ্বে সুপরিচিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মাঝে মাঝেই নানা ধরনের কৌতুক করার প্রবণতা দেখা যায়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ‘র্যাগস’ নামে পরিচিত।
এই র্যাগসের অংশ হিসেবেই, ১৯৩০-এর দশকে, জিওফ্রে হান্টার বেকার এবং তাঁর এক বন্ধু মিলে, গভীর রাতে কলেজের একটি ঘড়ির ঘন্টার কাঁটা সরিয়ে ফেলেন এবং সেখানে কার্ডবোর্ডের একটি নকল কাঁটা বসিয়ে দেন।
ট্রিক্সি জানান, ‘বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত কার্ডবোর্ডের কাঁটাগুলো বেশ ভালোই কাজ করেছিল’।
ঘটনাটি যখন ঘটেছিল, তখন জিওফ্রে হান্টার বেকার গনভিল অ্যান্ড কাইয়াস কলেজে আধুনিক ভাষা বিভাগে পড়াশোনা করতেন। তিনি ১৯৩৪ সালে ভর্তি হন এবং ১৯৩৭ সালে তাঁর পড়াশোনা শেষ করেন।
পরে, বাবার মৃত্যুর পর ট্রিক্সি বাবার কাছে পাওয়া সেই আসল ঘন্টার কাঁটাটি কলেজের সংগ্রহশালায় ফিরিয়ে দেন।
গনভিল অ্যান্ড কাইয়াস কলেজের বর্তমান আর্কাইভিস্ট জেমস কক্স, ট্রিক্সিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ছাত্রদের এমন কান্ড-কারখানা কলেজের দীর্ঘ এবং বৈচিত্র্যময় ইতিহাসের একটি অংশ। আমরা যদিও ছাত্রদের এ ধরনের কাজে উৎসাহিত করি না, তবে অনেক বছর পর যখন শুনি, তখন ভালো লাগে, কারণ এতে কারো কোনো ক্ষতি হয়নি এবং কোনো স্থায়ী ক্ষতিও হয়নি।
তারা সবাই পড়াশোনা শেষ করে গেছে।”
গনভিল অ্যান্ড কাইয়াস কলেজটি ১৩৪৮ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৫৫৭ সালে এটি নতুন করে গঠিত হয়।
শুধু এই ঘটনাই নয়, অতীতেও এই কলেজের ছাত্ররা নানা ধরনের কৌতুকপূর্ণ কাণ্ড ঘটিয়েছিল। যেমন, ১৯৫৮ সালে কলেজের প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য রাখা একটি ‘অস্টিন সেভেন’ ভ্যান গাড়ী তুলে নিয়ে যায়।
এছাড়াও, ১৯২১ সালে তারা একটি জার্মান কামানের গোলা সরিয়ে কাইয়াস কোর্টে প্রদর্শন করেছিল।
বর্তমানে, ঘড়ির ঘন্টার কাঁটাটি কলেজের সংগ্রহশালায় অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে সংরক্ষিত আছে।
তবে, মিনিটের কাঁটাটি এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান