মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, সাথে টর্নেডো ও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রবিবার থেকে শুরু করে এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কয়েক দিন পর্যন্ত চলতে পারে। এতে করে দেশটির ইলিনয় থেকে টেক্সাস পর্যন্ত প্রায় ১৭ কোটি মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে উষ্ণ ও আর্দ্র বাতাস এবং একটি শক্তিশালী শীতল বায়ুর সংঘর্ষের ফলেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে চলেছে। এর ফলস্বরূপ, টর্নেডো, বড় আকারের শিলাবৃষ্টি এবং শক্তিশালী বাতাস বয়ে যেতে পারে, যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসাধন করতে পারে।
আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা ‘স্টর্ম প্রেডিকশন সেন্টার’ জানিয়েছে, রবিবার দেশটির অনেক বড় শহর যেমন- ন্যাশভিল, ইন্ডিয়ানাপলিস এবং সেন্ট লুইসের প্রায় আড়াই কোটি মানুষকেSevere weather এর আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও, ডালাস, শিকাগো এবং ক্লিভল্যান্ড সহ আরও প্রায় চার কোটি মানুষ দ্বিতীয় স্তরের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ইতোমধ্যে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। ওকলাহোমা সিটিতে শিলাবৃষ্টির ছবি প্রকাশ করেছে সিএনএন এর সহযোগী সংস্থা কেওকো। সেই ছবিতে শিলার আকার দেখা গেছে একটি মার্বেলের থেকে শুরু করে একটি গলফ বলের সমান পর্যন্ত।
আবহাওয়াবিদরা আরও সতর্ক করে বলেছেন, রাতের বেলা টর্নেডোর কারণে হতাহতের সংখ্যা দিনের বেলার চেয়ে বেশি হতে পারে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, রাতের অন্ধকারে মানুষজন দুর্যোগের বিষয়ে দ্রুত অবগত হতে পারে না।
সোমবার পর্যন্ত এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার সকালে অ্যাপালাচিয়ান অঞ্চল থেকে লুইজিয়ানা এবং মিসিসিপি পর্যন্ত ঝড় বয়ে যেতে পারে। সোমবার সন্ধ্যায় প্রায় পুরো পূর্ব উপকূল জুড়ে এই দুর্যোগের প্রভাব দেখা যেতে পারে।
নিউ অরলিন্স থেকে বোস্টন পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি মানুষ এর আওতায় আসতে পারে। এই অঞ্চলের জন্য ক্ষতির পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর মার্চ মাস জুড়ে টর্নেডোর সংখ্যা অনেক বেশি। শুধু জানুয়ারি মাস থেকেই প্রায় ৩০০টি টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
গত বছর পুরো সময়ে প্রায় ২ হাজার টর্নেডোর খবর পাওয়া গিয়েছিল, যা ছিল রেকর্ড দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বুধবার টেক্সাস থেকে মিডওয়েস্ট পর্যন্ত আবারও ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সকলকে সতর্ক থাকতে এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়মিতভাবে জানার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন