শিরোনাম: 23andMe-এর দেউলিয়া হওয়া: ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
ঘরের বসে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ধারণা নিয়ে আসা 23andMe নামের একটি ডিএনএ (DNA) পরীক্ষা কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এর ফলে কোম্পানিটির গ্রাহকদের জেনেটিক ডেটা বা বংশগতীয় তথ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ গ্রাহকের এই তথ্য এখন কার হাতে যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিশাল ডেটা ভাণ্ডার কর্পোরেট সংস্থা এবং গবেষকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের স্বাস্থ্য বিষয়ক পূর্বাভাস থেকে শুরু করে খাদ্যাভ্যাস—অনেক কিছুই জানা যেতে পারে এই ডেটা থেকে।
মানুষের ডিএনএ-তে থাকা এই তথ্য ভবিষ্যতের অনেক গোপন বিষয়ও তুলে ধরতে পারে।
কিন্তু এই তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, একবার জেনেটিক ডেটা সংগ্রহ করা হলে, তা চিরকাল থেকে যায়।
বাজার গবেষণা বা বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য এই তথ্য খুবই মূল্যবান। কোনো ব্যক্তি কি ধরনের খাবার পছন্দ করেন, সেই বিষয়েও ধারণা পাওয়া যেতে পারে এই ডেটা থেকে।
এমনকি, একজন ব্যক্তি দোকানে কী কিনছেন, তার থেকেও বেশি তথ্য পাওয়া যেতে পারে তাঁর জেনেটিক ডেটা থেকে।
এই ডেটার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার হতে পারে স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণায়। কোনো ব্যক্তির শরীরে ভবিষ্যতে কোন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা এই তথ্যের মাধ্যমে জানা যেতে পারে।
23andMe নিজেও তাদের গ্রাহকদের এই পরিষেবা দিয়ে থাকে। এই ধরনের ডেটা ব্যক্তিগত চিকিৎসা বা স্বাস্থ্য গবেষণার কাজেও লাগতে পারে।
রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো অনেক সময় একই রকম হওয়ায়, চিকিৎসকরা অনেক সময় রোগ নির্ণয়ে সমস্যা অনুভব করেন। সেক্ষেত্রে এই জেনেটিক ডেটা অনেক সাহায্য করতে পারে।
তবে, এই ডেটার অপব্যবহারের সম্ভবনাও রয়েছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক বীমা অথবা চাকরির ক্ষেত্রে এই ডেটা ব্যবহার করে বৈষম্য করার সুযোগ থাকে।
যদিও আমেরিকাতে কিছু আইন রয়েছে, যা এই ধরনের বৈষম্য রোধ করতে পারে। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেমন—প্রতিবন্ধীতা বিষয়ক বীমার ক্ষেত্রে, তেমন কোনো সুরক্ষা এখনো পর্যন্ত নেই।
ইতিমধ্যে, 23andMe জানিয়েছে, ডেটা বিক্রির ক্ষেত্রে গ্রাহকদের তথ্যের সুরক্ষায় তারা সব আইন মেনে চলবে।
কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, একবার ডেটা বিক্রি হয়ে গেলে, তা ভবিষ্যতে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। এমনকি, কোনো ব্যক্তির স্বাস্থ্য বিষয়ক দুর্বলতা সম্পর্কে জেনে, বিজ্ঞাপনদাতারা সেই অনুযায়ী তাঁদের পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জেনেটিক ডেটার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা সম্ভব, যা তাঁর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই, এই ধরনের ডেটার সুরক্ষা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশে যদিও এখনো ডিএনএ পরীক্ষার চল সেভাবে শুরু হয়নি, তবুও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন