ঈদ উল-ফিতর: বিশ্বজুড়ে ঈদ উৎসবের ছবি
রমজান মাসের এক মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ঈদ উল-ফিতর মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসবগুলির মধ্যে একটি। সারা বিশ্বের মুসলিমরা এই দিনটি অত্যন্ত আনন্দ ও উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করে।
এই বছর, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঈদের ছবিগুলি যেন এক ভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে।
ফিলিস্তিনের গাজায়, ঈদের দিনেও যেন শোকের ছায়া। ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের কারণে সেখানকার মানুষজন মসজিদগুলোর ধ্বংসস্তূপের মাঝে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
অনেকের মনে ছিল প্রিয়জন হারানোর বেদনা, আবার অনেকের ঈদ কাটছে চরম খাদ্য সংকটে। যুদ্ধের কারণে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে, ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত।
অন্যদিকে, ইয়েমেনে ঈদের নামাজ শেষে শিশুদের কবরস্থানে ঘুরতে দেখা গেছে। পরিবারের প্রয়াত সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনায় তারা সেখানে প্রার্থনা করে।
সিরিয়ায়ও ঈদ উদযাপিত হয়েছে, তবে সেখানকার পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের ক্ষত কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেষ্টা করছে দেশটির মানুষ।
জম্মু ও কাশ্মীর, ভারত, ইসরায়েল, লিসবন, তেহরান, কুয়ালালামপুর, ইস্তাম্বুল, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, ইরাক, জেরুজালেম, সেন্ট পিটার্সবার্গ, পাকিস্তান, ঢাকা এবং ফিলিপাইনের কুইজন সিটিতেও ঈদ উদযাপন করা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন ঈদগাহে সমবেত হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এরপর আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আনন্দ-উৎসব, নতুন পোশাকে সেজে ওঠা শিশুদের কলরব, মুখরোচক খাবারের আয়োজন—সবকিছুতেই ছিল উৎসবের আমেজ।
ভারতে ঈদ উদযাপন ছিল চোখে পড়ার মতো। কলকাতার ব্যাঙ্করা থেকে শুরু করে আহমেদাবাদের বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেখানে ধর্মপ্রাণ মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ন্যাশনাল মসজিদে ঈদের নামাজে অংশ নেন বহু মানুষ। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ঐতিহাসিক সুলতানআহমেদ মসজিদেও ঈদের উৎসব ছিল চোখে পড়ার মতো।
ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় ঈদের নামাজ শেষে অনেকেই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন। সেখানে শিশুদের খেলাধুলা এবং নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঈদের আনন্দ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
বিশ্বজুড়ে ঈদ উল-ফিতরের এই আনন্দঘন মুহূর্তগুলো যেন এক সূত্রে গাঁথা। এই উৎসব শুধু আনন্দ আর উৎসবের নয়, বরং মুসলিম সম্প্রদায়ের গভীর একতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশও বটে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)