ইন্দোনেশিয়ার ‘ইসলামী ক্লাউন’ : শিশুদের কাছে ধর্মীয় মূল্যবোধ পৌঁছে দিচ্ছেন হাস্যরসের মাধ্যমে
ইন্দোনেশিয়ার তাঙ্গেরং-এ (Tangerang) ‘ইয়াহইয়া দ্য ক্লাউন’ বা ‘ইয়াহইয়া বাদুত’ নামেই বেশি পরিচিত ইয়াহিয়া হ্যান্ড্রাওয়ান। রঙিন পোশাক, মাথায় টুপি আর নাকে লাল একটা গোল বল—এসব নিয়ে শিশুদের কাছে হাজির হন তিনি।
তবে তিনি নিছক কোনো সার্কাসের ভাঁড় নন, বরং শিশুদের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধের আলো ছড়ানোই তার আসল উদ্দেশ্য।
ছোটবেলা থেকেই ইয়াহইয়ার শখ ছিল হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে মানুষকে আনন্দ দেওয়া। প্রথমে তিনি বিভিন্ন জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ক্লাউনের কাজ করতেন। এরপর ধর্মীয় শিক্ষক তাকে আবু নওয়াসের (Abu Nawas) গল্প শোনান।
আবু নওয়াস ছিলেন একজন জ্ঞানী ব্যক্তি, যিনি তার বুদ্ধি, কৌতুক এবং রসবোধের মাধ্যমে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ইয়াহইয়া অনুপ্রাণিত হন এবং শিশুদের কাছে ধর্মকে আরও আনন্দ-সহজ করে তোলার জন্য এই পথ বেছে নেন।
২০১০ সালে তিনি ‘শারিয়া ক্লাউন ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি তার সহযোগী ক্লাউনদের সাথে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষার প্রসার ঘটান।
তাদের ক্লাসের পদ্ধতিও বেশ অভিনব। হাসি-তামাশা, গান, জাদুকরী কৌশল—এসবের মাধ্যমে শিশুদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন তারা। এরপর ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ, নৈতিকতা এবং ভালো আচরণের শিক্ষা দেন।
ইয়াহইয়া প্রায়ই ক্লাসের শুরুতে একটি হাসিখুশি গান দিয়ে শুরু করেন। তিনি শিশুদের হাসতে উৎসাহিত করেন এবং বলেন, “মুসলমান হিসেবে হাসি-খুশি থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
হাদিসে আছে, ‘তোমার ভাইয়ের (মুসলমানের) প্রতি হাসি দেওয়াও সদকা।
ইয়াহইয়ার মতে, শিশুদের হাসিখুশি রাখলে তারা খুব সহজেই তাদের কথা বুঝতে পারে এবং ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়।
তিনি মনে করেন, ধর্মীয় শিক্ষার এই মজাদার পদ্ধতি শিশুদের কাছে ইসলামকে আরও প্রিয় করে তুলবে।
ইয়াহইয়ার এই ক্লাসে শুধু শিশুরা নয়, তাদের অভিভাবকরাও বেশ খুশি। তারা মনে করেন, ইয়াহইয়ার এই অভিনব পদ্ধতি শিশুদের মনে আনন্দের সাথে ইসলামের মৌলিক ধারণাগুলো গেঁথে দিতে সহায়ক হচ্ছে।
ইয়াহইয়ার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। আমাদের সমাজে শিশুদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষার এমন আনন্দ-উপযোগী পদ্ধতি খুবই দরকার।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস