বাংলাদেশ: ঘোড়দৌড়ের দুনিয়ায় এক রূপকথা, ‘ক্লিক-এন্ড-কালেক্ট’ করে গ্র্যান্ড ন্যাশনাল জয়ের স্বপ্ন।
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যপূর্ণ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা হলো গ্র্যান্ড ন্যাশনাল। প্রতি বছর লিভারপুলের এintree রেস কোর্সে অনুষ্ঠিত হওয়া এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বিশ্বের সেরা ঘোড়াগুলো। এবার এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চলেছে এমন একটি ঘোড়া, যার গল্প শুনলে রূপকথার মতোই মনে হয়।
ঘোড়াটির নাম হলো ‘হোরানৎজাও ডি’এয়ারি’।
হোরানৎজাও ডি’এয়ারি-র মালিক হলেন মাইকেল কেইডি, যিনি পেশায় একজন প্রশিক্ষক। কেইডির অশ্বশালাটি ইংল্যান্ডের নিউমার্কেট শহরে অবস্থিত। সাধারণত ফ্ল্যাট রেসিংয়ের জন্য পরিচিত নিউমার্কেটের এই প্রশিক্ষক-এর গ্র্যান্ড ন্যাশনাল-এর মতো জনপ্রিয় একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের বিষয়টি অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত।
কেইডির এই যাত্রাপথ শুরু হয়েছিল অনলাইনে ঘোড়াটি কেনার মাধ্যমে। আয়ারল্যান্ডের বিখ্যাত প্রশিক্ষক উইলি মুলিন্স-এর কাছ থেকে তিনি প্রায় ৫ কোটি টাকার বিনিময়ে (ঐ সময়কার বিনিময় হার অনুযায়ী) ঘোড়াটি কেনেন।
কিন্তু হোরানৎজাও ডি’এয়ারি-কে কেনা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া পর্যন্ত সবকিছুই যেন ছিল একটি চ্যালেঞ্জ। কেইডির বাড়ি থেকে আintree রেস কোর্সের দূরত্ব প্রায় কয়েক’শ মাইল। সবচেয়ে বড় কথা হলো, কেইডি-র প্রশিক্ষক হিসেবে তেমন কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না।
ঘোড়াটিকে দ্রুত নিউমার্কেটে ফিরিয়ে আনাও ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ গ্র্যান্ড ন্যাশনাল-এর সময় ঘনিয়ে আসছিল। অবশেষে অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর, কেইডি-র তত্ত্বাবধানে হোরানৎজাও ডি’এয়ারি-র প্রশিক্ষণ শুরু হয়।
নিউমার্কেটের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হোরানৎজাও ডি’এয়ারি-কে নিয়ে আসাটাও ছিল বেশ আলোচনা-সৃষ্টির মতো একটি ঘটনা। কারণ, সাধারণত এখানে ক্লাসিক রেসের জন্য ঘোড়া প্রস্তুত করা হয়। সেখানে এই বিশালদেহী স্টীপলচেজারকে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন।
স্থানীয়রা কেইডি-র কাছে প্রায়ই জানতে চাইতেন, এই সুদর্শন ঘোড়াটি কার?
কেইডি জানিয়েছেন, হোরানৎজাও ডি’এয়ারি-র প্রস্তুতি ভালোভাবেই চলছে। যদিও শুরুতে তার ফুসফুসে সামান্য সংক্রমণ হয়েছিল, তবে এখন সে সম্পূর্ণ সুস্থ।
কেইডি মনে করেন, উইলি মুলিন্সের মতো একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের কাছ থেকে একটি ঘোড়াকে নিয়ে এসে তার সেরাটা বের করা কঠিন। তবে তিনি আশাবাদী, যদি হোরানৎজাও ডি’এয়ারি তার সেরাটা দিতে পারে, তবে প্রতিযোগিতায় ভালো ফল করা সম্ভব।
এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় কেইডি-র পরিবারও পাশে আছে। কেইডি একজন আইরিশ পরিবারের সন্তান। তার বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। তাদের আশা, এই যাত্রা একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হবে।
গ্র্যান্ড ন্যাশনাল-এর মতো প্রতিযোগিতায় একজন অনভিজ্ঞ প্রশিক্ষক এবং কম পরিচিত একটি ঘোড়ার জয় পাওয়া কঠিন। তবে কেইডি-র দল স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। তাদের মতে, টিকিট তো কেনা হয়ে গেছে, এখন শুধু শনিবারের (২০২৫ সালের গ্র্যান্ড ন্যাশনাল-এর তারিখ) ফলাফলের অপেক্ষা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান