ফিলাডেলফিয়া চিড়িয়াখানায় প্রায় একশো বছর বয়সী একটি কচ্ছপ দম্পতির প্রথমবার বাবা-মা হওয়ার ঘটনা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়। এই বিরল প্রজাতির কচ্ছপগুলো হলো গ্যালাপাগোস কচ্ছপ, যা বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মমি নামের স্ত্রী কচ্ছপ এবং আব্রাজ্জো নামের পুরুষ কচ্ছপটির ডিম থেকে চারটি বাচ্চা ফুটেছে। চিড়িয়াখানার ১৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম গ্যালাপাগোস কচ্ছপের বাচ্চা জন্ম নেওয়ার ঘটনা ঘটল।
গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ, ইকুয়েডরের একটি আগ্নেয় দ্বীপমালা, যা জীববৈচিত্র্যের এক অনন্য স্থান হিসেবে সুপরিচিত। এখানকার গ্যালাপাগোস কচ্ছপ তাদের বিশাল আকারের জন্য বিখ্যাত।
এদের গড় আয়ু একশো বছরের বেশি হয়ে থাকে। এই কচ্ছপগুলো পরিবেশের পরিবর্তন এবং মানুষের কার্যকলাপের কারণে আজ বিলুপ্তির পথে। তাই এদের প্রজনন এবং বংশবিস্তার সংরক্ষণ চেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, এই চারটি বাচ্চা বর্তমানে সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী রাখার ঘরের অভ্যন্তরে বিশেষ তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তাদের ওজন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ গ্রামের মধ্যে, যা একটি মাঝারি আকারের ডিমের ওজনের সমান।
গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি প্রথম ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় এবং আরও কিছু ডিম থেকে বাচ্চা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
চিড়িয়াখানার প্রেসিডেন্ট ও সিইও জো-এলে মোগারম্যান এই ঘটনাকে ফিলাডেলফিয়া চিড়িয়াখানার জন্য একটি “গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও জানান, মমি ১৯৩২ সাল থেকে চিড়িয়াখানায় রয়েছে এবং চিড়িয়াখানায় আসা বহু দর্শনার্থী তাকে দেখেছেন।
তাদের আশা, এই কচ্ছপ শাবকগুলো একশো বছর পরে গ্যালাপাগোস কচ্ছপের একটি সুস্থ-সবল জনগোষ্ঠীর অংশ হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমি প্রজাতিগতভাবে অত্যন্ত মূল্যবান একটি কচ্ছপ। এমনকি, এই প্রজাতির সবচেয়ে বয়স্ক মা হিসেবেও তাকে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর আগে, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার রিভারব্যাঙ্কস চিড়িয়াখানায় গ্যালাপাগোস কচ্ছপের বাচ্চা জন্ম নিয়েছিল।
ফিলাডেলফিয়া চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আগামী ২৩শে এপ্রিল জনসাধারণের জন্য কচ্ছপ শাবকদের উন্মোচন করার পরিকল্পনা করছে এবং তাদের নামকরণের জন্য একটি প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হবে।
এই ঘটনা গ্যালাপাগোস কচ্ছপ সংরক্ষণে চিড়িয়াখানাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রমাণ দেয়। বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের টিকিয়ে রাখতে প্রজনন কেন্দ্রগুলোর প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস