“অল আই নিড ইজ আ মিরাকেল” – নব্বইয়ের দশকে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই গানটি আজও সঙ্গীতপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। মাইক অ্যান্ড দ্য মেকানিক্স ব্যান্ডের এই জনপ্রিয় গানটির জন্মকথা শুনলে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন। গানটি তৈরির পেছনে ছিল অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা, যা এর সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
গানটির নির্মাতা ছিলেন প্রযোজক ও লেখক ক্রিস্টোফার নীল এবং গিটারিস্ট ও লেখক মাইক রাদারফোর্ড। মূলত, এই দুইজনের সৃজনশীলতার ফলেই গানটি পেয়েছে তার আসল রূপ।
ক্রিস্টোফার নীল জানিয়েছেন, “আমি তখন অন্যান্য শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করছিলাম। মাইক রাদারফোর্ড ছিলেন ‘জেনেসিস’ ব্যান্ডের একজন সদস্য, যিনি ছিলেন একজন প্রোগ-রক শিল্পী। আমাদের গান লেখার ধরন ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তবে, আমাদের মধ্যে দারুণ একটা বোঝাপড়া ছিল, যা গানটিকে সফল করতে সাহায্য করেছে।”
রাদারফোর্ড সবসময় একটি টেপ রেকর্ডার সাথে রাখতেন এবং সেখানে সুরের ছোট ছোট স্কেচ তৈরি করতেন। একদিন তিনি ক্রিস্টোফার নীলকে টেপটি দিয়ে বলেন, “তোমার যা ভালো লাগে, সেখান থেকে নাও।”
নীল তখন একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেখানে কিছুটা একঘেয়ে লাগছিল, তাই তিনি টেপটি মনোযোগ সহকারে শোনা শুরু করেন। টেপের দ্বিতীয় অংশে তিনি গানের সুর খুঁজে পান। এরপরে, তারা দুজনে মিলে গানটির বাকি অংশ তৈরি করেন।
গানের কথাগুলো একজন প্রেমিকের বিচ্ছেদের কষ্ট নিয়ে লেখা। মেয়েটি চলে যাওয়ার পর, প্রেমিক বুঝতে পারে সে কি ভুল করেছে। সে ফিরে আসার জন্য আকুল হয়ে ওঠে। গানটি শুনলে প্রথমে কিছুটা দুঃখ হয়, তবে সুরের কারণে এটি যেন এক নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত দেয়।
এই গানের সাফল্যের পেছনে কণ্ঠশিল্পী পল ইয়ংয়ের কণ্ঠের জাদুও কম ছিল না। ক্রিস্টোফার নীল বলেন, “আমরা গান তৈরি করার পরে কণ্ঠশিল্পীদের অডিশন নিতাম।
পল ইয়ংয়ের কণ্ঠ ‘মিরাকেল’-এর জন্য একদম উপযুক্ত ছিল। তার কণ্ঠের গভীরতা গানটিকে অন্যরকম মাত্রা দিয়েছিল।”
গানটি তৈরির সময়কার স্মৃতিচারণ করে রাদারফোর্ড বলেন, “আমি সবসময় চেষ্টা করেছি নতুন কিছু করার। ‘মিরাকেল’ তেমনই একটি গান, যা একই সাথে আনন্দ এবং কিছুটা বিষাদের অনুভূতি নিয়ে আসে।”
গানটি মুক্তির পর আমেরিকায় দারুণ জনপ্রিয়তা পায় এবং শীর্ষ ৫ গানের তালিকায় স্থান করে নেয়। পরবর্তীতে, গানটি বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করে। বর্তমানে, মাইক অ্যান্ড দ্য মেকানিক্স তাদের যুক্তরাজ্য সফর করছেন।
তাদের সেরা গানের একটি সংকলনও প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান