গর্ভবতী স্ত্রীর আকুল আবেদন: কারাবন্দী স্বামীর জন্য প্রতীক্ষা
আমি যদি এই মুহূর্তে আমার স্বামীকে নিয়ে লিখি, তবে হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন? কারণটা হলো ভালোবাসা। কারণটা হলো, গভীর মায়া আর অনাগত সন্তানের পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
সম্প্রতি, ড. নূর আবদুল্লাহ নামের এক নারী তার কারাবন্দী স্বামীর উদ্দেশ্যে এমনই একটি আবেগঘন চিঠি লিখেছেন।
মাহমুদ খলিল, যিনি ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে কথা বলার কারণে বর্তমানে একটি আটক কেন্দ্রে বন্দী আছেন।
ড. নূর আবদুল্লাহ একজন দন্ত চিকিৎসক, যিনি অচিরেই মা হতে যাচ্ছেন। তাদের ভালোবাসার সাক্ষী হতে পৃথিবীতে আসছে নতুন অতিথি, আর এই সময়েই তাদের জীবনে নেমে এসেছে এই কঠিন পরিস্থিতি।
চিঠিতে নূর জানিয়েছেন, বিয়ের পর এই প্রথম এত দীর্ঘ সময় তারা একে অপরের থেকে দূরে রয়েছেন। প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্তে তিনি তার স্বামীকে আরও বেশি অনুভব করেন।
আসন্ন সন্তান জন্ম দেওয়ার সময়ে স্বামীর অনুপস্থিতি তাকে এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তিনি একা হাতেই এই কঠিন পথ পাড়ি দিচ্ছেন, যেখানে তার স্বামীকে একটি অন্যায় বন্দীত্বের শিকার হতে হচ্ছে।
নূরের ভাষায়, মাহমুদ একজন অসাধারণ মানুষ। তিনি তার স্বামীর সাহসিকতা ও দৃঢ়তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
মাহমুদ, যিনি সবসময় সত্যের পক্ষে কথা বলেছেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন, তিনি নূরের কাছে একজন আদর্শ পুরুষ এবং সন্তানের পিতা।
চিঠিতে নূর আরও উল্লেখ করেছেন, যারা মাহমুদকে মিথ্যা অভিযোগে বন্দী করেছে, তাদের স্বরূপ উন্মোচন করা হবে। তিনি তাদের অপচেষ্টাকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বিশ্বাস করেন, মাহমুদকে বন্দী করার মাধ্যমে তারা আসলে তাদের ভয়ের প্রকাশ ঘটিয়েছে। কারণ মাহমুদ তাদের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন।
নূর জানিয়েছেন, তারা সবসময় তাদের মৌলিক অধিকার, বিশেষ করে বাকস্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। তিনি তার সন্তানের কাছে তার বাবার সাহস এবং ত্যাগের গল্প বলবেন।
তিনি চান, তার সন্তান যেন তাদের মতো মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াই করতে বাধ্য না হয়।
নূরের দৃঢ় বিশ্বাস, মাহমুদ খুব শীঘ্রই মুক্তি পাবেন। তিনি জানেন, মাহমুদ এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবেন।
মুক্তির পর মাহমুদ নিশ্চয়ই ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য স্লোগান দেবেন, এমনটাই তিনি মনে করেন।
ড. নূর আবদুল্লাহর এই চিঠি, একদিকে যেমন গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, তেমনই অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। এই চিঠি, সকল বাধা পেরিয়ে ভালোবাসার জয়গান।
তথ্য সূত্র: The Guardian