গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়া একটি জাহাজে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে, জানিয়েছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন। আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাল্টার কাছাকাছি এই হামলায় জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, জাহাজটিতে থাকা ক্রু ও যাত্রীরা সবাই অক্ষত আছেন।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘কনসায়েন্স’ নামের জাহাজটি গাজার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। ইসরায়েলের অবরোধের শিকার গাজায় ত্রাণ ও সহায়তা পৌঁছে দেওয়াই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্থানীয় সময় রাত ১২টা ২৩ মিনিটে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটির ওপর সরাসরি হামলা চালানো হয়।
সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহার করে দুবার হামলা চালানো হয়, যার ফলে জাহাজের সামনের অংশে আগুন ধরে যায় এবং কাঠামোর ক্ষতি হয়।
সংগঠনটি এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।
তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাল্টা সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাহাজে থাকা ১২ জন ক্রু ও ৪ জন বেসামরিক যাত্রী সবাই নিরাপদে আছেন।
খবর পাওয়ার পর একটি উদ্ধারকারী টাগবোটকে (tugboat) সাহায্য করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন জানিয়েছে, ২১টি দেশের নাগরিক এই জাহাজে ছিলেন, যাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল গাজায় ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো এবং জরুরি ত্রাণ সরবরাহ করা।
তাদের দাবি, ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জবাবদিহি করতে হবে।
একইসাথে, গাজায় চলমান অবরোধ এবং বেসামরিক জাহাজে হামলারও জবাব চাইতে হবে।
উল্লেখ্য, প্রায় দুই মাস আগে গাজায় কঠোর অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল।
এর ফলে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধসহ জরুরি সামগ্রীর প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া, গত মার্চ মাস থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানও বেড়েছে।
গাজায় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে, তাদের খাদ্যশস্যের মজুত প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।
সেখানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাদ্য সংকটের কারণে যারা বাইরে থেকে খাবার পায় না, তাদের জন্য আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রান্নাঘরগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা অবশ্য অভিযোগ করেন যে, হামাস ত্রাণ চুরি করে তাদের যোদ্ধাদের মধ্যে বিতরণ করে অথবা তা বিক্রি করে তহবিল সংগ্রহ করে।
তবে গাজার ত্রাণ কর্মকর্তারা সম্প্রতি ত্রাণ চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এর আগে, ২০১০ সালে তুরস্ক থেকে যাত্রা করা ফ্রিডম ফ্লোটিলার একটি জাহাজে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছিল।
এতে ১০ জন নিহত এবং ২৮ জন আহত হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের চালানো এক হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক নাগরিক।
এরপর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২,৪১৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান