ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে মার্কিন গণমাধ্যমকে অর্থ সাহায্য বন্ধের চেষ্টা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এই আদেশের মূল লক্ষ্য হলো, দেশটির প্রধান দুটি পাবলিক ব্রডকাস্টিং সংস্থা, ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর) এবং পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (পিবিএস)-এর সরকারি তহবিল বন্ধ করা। ট্রাম্পের অভিযোগ, এই মাধ্যমগুলো পক্ষপাতদুষ্ট খবর পরিবেশন করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এনপিআর এবং পিবিএস-এর কার্যক্রম চলে মূলত সরকারি অর্থায়নে, তবে এর বাইরে তারা ব্যক্তিগত অনুদানও পেয়ে থাকে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এমনকি তিনি তাদের ‘জনগণের শত্রু’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন। যদিও রক্ষণশীল গণমাধ্যম, বিশেষ করে ফক্স নিউজের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল বেশ ঘনিষ্ঠ। এমনকি এই চ্যানেলের কিছু উপস্থাপককে তিনি তার প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছিলেন।
ট্রাম্প তার নির্বাহী আদেশে উল্লেখ করেন, “ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর) এবং পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিস (পিবিএস) কর্পোরেশন ফর পাবলিক ব্রডকাস্টিং (সিপিবি)-এর মাধ্যমে করদাতাদের অর্থ পায়। তাই আমি সিপিবি বোর্ড অফ ডিরেক্টরস এবং সকল নির্বাহী বিভাগ ও সংস্থাকে নির্দেশ দিচ্ছি, এনপিআর ও পিবিএস-এর জন্য ফেডারেল ফান্ডিং বন্ধ করতে।” তিনি আরও যোগ করেন, “উভয় সংস্থাই করদাতাদের কাছে বর্তমান ঘটনাপ্রবাহের ন্যায্য, নির্ভুল বা নিরপেক্ষ চিত্র তুলে ধরে না।”
উল্লেখ্য, সিপিবি-র বাজেট ২০২৭ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। ফলে ট্রাম্পের এই আদেশের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এনপিআর-এর পরিচালক ক্যাথরিন মাহেরের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৫ সালে রেডিও স্টেশনটি সিপিবি থেকে প্রায় ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো পাবে, যা তাদের মোট বাজেটের ৫ শতাংশেরও কম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এনপিআর-এর শ্রোতার সংখ্যা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৪০ মিলিয়নের বেশি এবং পিবিএস-এর স্থানীয় টেলিভিশন স্টেশনগুলোর দর্শক প্রতি মাসে প্রায় ৩৬ মিলিয়ন।
এদিকে, সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ‘ভয়াবহভাবে হ্রাস’ পাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বিশ্বজুড়ে স্বাধীন সাংবাদিকদের জন্য নজিরবিহীন সমস্যার কথাও উল্লেখ করেছে। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার এই ধরনের পদক্ষেপ একটি গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য অশনি সংকেত।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান