যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক তরুণী শিক্ষিকা, যিনি ভালোবাসতেন তার প্রথম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের, তাঁর মৃত্যু নিয়ে রহস্য এখনো কাটেনি। ২০১১ সালের ২৬শে জানুয়ারি, এলেন গ্রিনবার্গ নামের এই শিক্ষিকাকে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া যায়, যেখানে তাঁর শরীরে ছিল ২০টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন।
প্রথমে তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে রায় দেওয়া হলেও, এই রায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তাঁর পরিবার। তাঁদের দাবি, এলেনকে খুন করা হয়েছে এবং তাঁরা চান এই ঘটনার পুনরায় তদন্ত হোক।
এলেন গ্রিনবার্গের মৃত্যুরহস্য নিয়ে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন খ্যাতিমান আইনজীবী ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ন্যান্সি গ্রেস। তাঁর নতুন বই, ‘হোয়াট হ্যাপেন্ড টু এলেন? অ্যান আমেরিকান মিসক্যারেজ অফ জাস্টিস’-এ তিনি এই মামলার গভীরে গিয়েছেন।
বইটিতে তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে একটি তরুণীর মৃত্যু আত্মহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, এর পেছনে লুকিয়ে আছে গভীর রহস্য।
ঘটনার দিন এলেন তাঁর মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন। এরপর তিনি স্কুলে যান এবং সন্ধ্যায় যখন তাঁর প্রেমিক স্যাম গোল্ডবার্গ ফ্ল্যাটে ফেরেন, তখন তিনি এলেনকে রক্তাক্ত অবস্থায় খুঁজে পান।
ময়নাতদন্তে প্রথমে তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, পরে এই রায় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ হিসেবে জানা যায়, তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্নগুলো আত্মহত্যার ইঙ্গিত বহন করে না।
এমনকি, আঘাতের ধরনও সন্দেহজনক ছিল।
এলেনের বাবা-মা, স্যান্ডি ও জোশ গ্রিনবার্গ, তাঁদের মেয়ের মৃত্যু নিয়ে শুরু থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন। তাঁরা কখনোই বিশ্বাস করতে পারেননি যে এলেন আত্মহত্যা করেছেন।
তাঁরা তাঁদের মেয়ের মৃত্যুরহস্য উন্মোচনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের এই লড়াইয়ে সমর্থন জুগিয়েছেন ন্যান্সি গ্রেসের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
ন্যান্সি গ্রেস মনে করেন, এলেন আত্মহত্যা করতে পারেন না। কারণ, তাঁর শরীরে আঘাতের ধরন এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা আত্মহত্যার ধারণার সঙ্গে মেলে না।
তিনি উল্লেখ করেছেন, এলেনের শরীরে এমন কিছু স্থানে আঘাত করা হয়েছে, যা একজন মানুষের পক্ষে নিজের উপর করা সম্ভব নয়।
এই মামলার তদন্ত এখনো চলছে। এলেনের পরিবার চায়, কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করুক এবং দোষীদের খুঁজে বের করুক।
ন্যান্সি গ্রেসের বই প্রকাশের পর, অনেকেই আশা করছেন, এই মামলার জট খুলবে এবং সত্য সামনে আসবে।
ন্যান্সি গ্রেসের বই থেকে প্রাপ্ত অর্থ তিনি ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েটেড চিলড্রেন’ (NCMEC)-কে দেবেন, যা শিশুদের সুরক্ষায় কাজ করে।
তথ্য সূত্র: পিপল