মে দিবস: শ্রমিক অধিকার আদায়ে বিশ্বজুড়ে মিছিল ও সমাবেশ
পহেলা মে, শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের দিনটি বিশ্বজুড়ে পালিত হয়েছে নানা আয়োজনে। টোকিও থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত বিভিন্ন শহরে শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা এই দিনে অধিকার আদায়ের দাবিতে মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেয়।
জাপানের রাজধানী টোকিওতে traditional drum-এর আওয়াজের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ ‘বানজাই’ ধ্বনি দিতে দিতে শহরের রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। মায়েদের একটি দলের সদস্য জুনকো কুরামোচি বলেন, “আমাদের শিশুদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ দিতে শ্রমিকদের অধিকার অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।”
অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শহরে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক সংগঠনগুলো বিশেষভাবে অভিবাসী শ্রমিক, সরকারি কর্মচারী এবং বিভিন্ন বৈষম্য বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ জানায়। লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত একটি বিশাল সমাবেশে একটি ব্যানারে লেখা ছিল, “এক সংগ্রাম, এক জোট – শ্রমিক ঐক্যবদ্ধ!” সেখানে সার্ভিস এমপ্লয়িজ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট এপ্রিল ভেরেট বলেন, “যারা ভয় ও মিথ্যা ছড়িয়ে আমাদের বিভক্ত করতে চাইছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছি। আমরা জানি, অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর আক্রমণ মানে সকল শ্রমিকের ওপর আক্রমণ।”
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবো Subianto রাজধানী জাকার্তার ন্যাশনাল মনুমেন্ট পার্কে শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, “আমি নেতৃত্ব দিলে ইন্দোনেশিয়া থেকে দারিদ্র্য দূর করতে আপ্রাণ চেষ্টা করব।” ইন্দোনেশিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট সাইদ ইকবাল জানান, প্রায় দুই লাখ শ্রমিক এই দিনের মিছিলে অংশ নেয়। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে ছিল আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল, বেতন বৃদ্ধি, এবং অভ্যন্তরীণ ও বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
তাইওয়ানেও প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক বিভিন্ন অধিকার আদায়ের দাবিতে মিছিল করে। তাদের মধ্যে মৎস্য ও টেলিযোগাযোগ খাতের শ্রমিকরাও ছিল। তারা উন্নত কর্মপরিবেশের দাবি জানায়।
জাপানে শ্রমিকদের দাবি ছিল আরও বিস্তৃত। এর মধ্যে ছিল উচ্চ বেতন, লিঙ্গ সমতা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সামরিক ব্যয় হ্রাস এবং ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ সরবরাহ। গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধ এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধের দাবিও জানানো হয়।
বিশ্বজুড়ে শ্রমিক দিবসের এসব আয়োজন শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের দীর্ঘ সংগ্রামের একটি অংশ। বিভিন্ন দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলো তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস