1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 10, 2025 12:54 AM
সর্বশেষ সংবাদ:
ঈদের ছুটিতে হাজারো পর্যটক দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখর সাগরকন্যা কুয়াকাটা কাপ্তাইয় তৃতীয় দিনে বিনোদন কেন্দ্রে উপচে পড়া ভীড়  কাপ্তাই শিলছড়ি হাজির টেক শত্রুতার জেরে ঘরে আগুন কাপ্তাইয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি  ইউসুফের দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ  দুর্যোগকালীন ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ১০আর ই ব্যারালিয়নের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ  চিৎমরম বন্যহাতি  ধারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে জামায়াতের আর্থিক অনুদান প্রদান  কাউখালীতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত কাউখালী ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি পূণ:নির্মানের দাবীতে মানববন্ধন কাপ্তাইয়ে বিশ্বাস তামাক দিবস উদযাপন  কাউখালী হাসপাতালে দুস্থ রোগীদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ

ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক সাম্রাজ্য: ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে যাওয়া হিটটাইটদের গল্প!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Tuesday, April 15, 2025,

এক সময়ের প্রতাপশালী হিট্টি সাম্রাজ্য, যা একসময় তুরস্ক এবং তার আশেপাশে বিশাল অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত ছিল, ইতিহাসের পাতা থেকে যেন হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্কে নতুন তথ্য উঠে আসছে, যা আমাদের বিস্মিত করে।

তাদের রাজধানী হাত্তুশা ছিল এক অসাধারণ নগরী, যা আধুনিক তুরস্কের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। উঁচু পাহাড়ের ঢালে নির্মিত এই শহরে ৭,০০০ মানুষের বাস ছিল, বিশাল মন্দির এবং প্রাসাদ ছিল, যা দূর থেকেও দেখা যেত।

হিট্টিরা খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ থেকে ১১৮০ অব্দ পর্যন্ত এই অঞ্চলে রাজত্ব করে। তাদের সাম্রাজ্য উত্তরে কৃষ্ণ সাগর থেকে শুরু করে মেসোপটেমিয়ার নদী এবং ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

তারা উন্নত নগরী, বিশাল মন্দির এবং জটিল প্রাসাদ তৈরি করেছিল। তাদের তৈরি করা কীলকাক্ষর লিপিতে লেখা বিশাল সংগ্রহে বিভিন্ন প্রাচীন ভাষা এবং ধর্মীয় রীতিনীতি লিপিবদ্ধ ছিল।

তাদের রাজারা বাণিজ্য পথ ব্যবহার করে দূর-দূরান্তের দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা করতেন। এমনকি তাদের সেনাবাহিনী একসময় মেসোপটেমিয়ার গভীরে প্রবেশ করেছিল।

প্রাচীন মিশরের ফারাও দ্বিতীয় রামেসিসের সঙ্গে তাদের কা “দে”শ-এর যুদ্ধে (Battle of Kadesh) হিট্টিদের সম্পর্ক হয়, যা ইতিহাসে প্রথম শান্তি চুক্তি হিসেবে পরিচিত। জার্মানির প্রত্নতাত্ত্বিক ইনস্টিটিউটের আন্দ্রেয়াস শ্যাকনার এই সাইটে দীর্ঘদিন ধরে খননকার্য চালাচ্ছেন।

তিনি জানান, “মিশরীয়, ব্যাবিলনীয় বা আ্যসিরীয়—এরা সবাই ইতিহাসের অংশ, কিন্তু হিট্টিরা যেন একেবারে হারিয়ে গিয়েছিল।”

হিট্টিদের কথা মানুষজন প্রায় ৩০০০ বছর পর্যন্ত জানত না। তবে মিশরের মন্দিরগুলোতে তাদের সম্পর্কে কিছু লেখা এবং মাটির ফলকে লেখা কূটনৈতিক চিঠিপত্র আবিষ্কারের পর তাদের রাজধানী খোঁজার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে আগ্রহ বাড়ে।

হাত্তুশাতে খননকার্যের ফলে কীলকাক্ষর লিপিতে লেখা অনেক তথ্য পাওয়া যায়, যা প্রমাণ করে যে হাত্তুশা ছিল হিট্টিদের রাজধানী।

শ্যাকনারের মতে, হাত্তুশা একসময় বাণিজ্য, সংস্কৃতি এবং বিজয়ের কেন্দ্র ছিল। এখানকার রাজকীয় বিবাদ, ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে কুকুর হত্যার শাস্তি—সবকিছু নিয়ে গবেষকরা তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

কিন্তু এই সাম্রাজ্যের পতনের কারণ এখনো রহস্যে ঘেরা। কিভাবে এত শক্তিশালী হিট্টিরা কোনো চিহ্ন না রেখে হারিয়ে গেল?

হাত্তুশার উত্তরে গেটের কাছে বিশাল মন্দির কমপ্লেক্স ছিল, যেখানে ধর্মীয় স্থান, উঠান, গুদামঘর এবং গোপন কুঠুরি ছিল। এখানে তারা তাদের দেবতা তারহুন্না এবং সূর্যের দেবী আরিনার উদ্দেশ্যে পূজা করত।

মন্দিরের চারপাশে ৮০টি গুদামঘরের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেখানে ওয়াইন, জল এবং শস্য মজুত করা হতো। শ্যাকনার জানান, “যুদ্ধ থেকে ফিরে আসা রাজা তার সমস্ত সম্পদ এই দেবতার কাছে উৎসর্গ করতেন।”

হিট্টিরা কেন তাদের রাজধানী এখানে তৈরি করেছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। এখানকার জলবায়ু ছিল বেশ কঠিন।

অন্যদিকে পাথুরে পাহাড়ে প্রচুর ঝর্ণা ছিল, অন্যদিকে সমতল ভূমিগুলো প্রায় সারা বছর শুকনো থাকত, মাঝে মাঝে বন্যা হতো। হিট্টিদের টেক্সট এবং পরিবেশগত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এখানে প্রায়ই খরা হতো, যার কারণে মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হতো।

হিট্টিরা তাদের টিকে থাকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে। তারা পাহাড়ের ঢালে পুকুর তৈরি করে জল সংরক্ষণ করত। তারা মাটির নিচে বিশাল শস্য ভান্ডার তৈরি করেছিল, যা খরার সময় পশুদের খাদ্য সরবরাহ করত।

তাদের নির্মিত ৪ মাইল দীর্ঘ প্রাচীর ছিল, যা পাহাড়ের ঢাল এবং গভীর খাদগুলোর সঙ্গে মানিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।

হাত্তুশার সবচেয়ে উঁচু স্থানে ছিল ইয়েরকাপি, যা ১৩০ ফুট উঁচু এবং ৮২০ ফুট লম্বা ছিল। এই বিশাল কাঠামোটি ১২ মাইল দূর থেকেও দেখা যেত।

শ্যাকনার বলেন, “বাবিলের কোনো রাষ্ট্রদূত যদি এই স্থানটি দেখতেন, তাহলে তিনি বিস্মিত হতেন।”

সম্প্রতি, ইয়েরকাপির নিচে একটি সুড়ঙ্গে ২৫০টিরও বেশি প্রতীকচিহ্ন পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত শব্দ বা ধারণা বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। গবেষক বুলেন্ট গেঙ্ক-এর মতে, “এই সুড়ঙ্গটি পাথরের তৈরি একটি নকশার মতো।”

হিট্টিদের ক্ষমতা এবং প্রভাব সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যায় মিশরের ফারাও দ্বিতীয় রামেসিসের সমাধিস্থলে। এখানে তাদের সাথে কা “দে”শ-এর যুদ্ধের বর্ণনা রয়েছে।

যদিও এই যুদ্ধ উভয় পক্ষের জন্য জয়-পরাজয়হীন ছিল, তবে এর ফলস্বরূপ তারা শান্তি চুক্তি করতে বাধ্য হয়, যা ইতিহাসের প্রথম লিখিত চুক্তি হিসেবে পরিচিত। এই চুক্তিতে উভয় পক্ষ একে অপরের প্রতি সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

হিট্টিরা তাদের সাম্রাজ্যকে “সহস্র দেবতার ভূমি” বলত। তারা অন্য কোনো রাজ্য জয় করলে, সেখানকার স্থানীয় দেবতাদেরও তাদের রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত করত। তারা স্থানীয় দেবতাদের মূর্তিগুলোকে হাত্তুশার মন্দিরে নিয়ে এসে পূজা করত।

হিট্টিদের ভাষা ১৯১৫ সাল পর্যন্ত বোঝা যায়নি। চেক ভাষাবিদ বেডরিখ হ্রোজনি আবিষ্কার করেন যে, তাদের লেখা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।

হাত্তুশা এবং অন্যান্য হিট্টি শহর থেকে ৩০,০০০ এর বেশি মাটির ফলক উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতি বছর নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কার হচ্ছে, যা হিট্টিদের সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করছে।

হিট্টি সাম্রাজ্যের পতনের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ—এগুলো সবই তাদের পতনের কারণ হতে পারে।

সম্ভবত, এইসব কারণ একত্রিত হয়ে হিট্টিদের দুর্বল করে দেয়।

১১৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, হিট্টিরা তাদের রাজধানী ত্যাগ করে। কোনো যুদ্ধ বা ধ্বংসের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাদের মন্দিরের ভাণ্ডারে থাকা সোনা, রূপা, অস্ত্র এবং যুদ্ধের সরঞ্জামগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এরপর শহরটিতে আগুন লাগে। কিন্তু এই আগুনের ফলেই তাদের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল—হাজার হাজার মাটির ফলক—সংরক্ষিত হয়, যা তাদের সম্পর্কে আমাদের জানতে সাহায্য করে।

হিট্টিদের পতন এবং তাদের পুনরায় আবিষ্কার—এই উভয় ঘটনাই টিকে থাকার গুরুত্ব এবং সঠিক তথ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার প্রমাণ।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT