শিশুদের বইয়ের জগতে, প্রচ্ছদের ভেতরের পাতা বা ‘এন্ডপেপার’-এর শিল্পকর্ম এখন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। আগে যেখানে এই পাতাগুলো কেবল অলঙ্করণের স্থান ছিল, সেখানে এখন গল্প বলার এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে এর কদর বাড়ছে।
সম্প্রতি অ্যামহার্স্টের এরিক কার্ল মিউজিয়াম অফ পিকচার বুক আর্টে শুরু হয়েছে ‘ওপেন + শাট’ শীর্ষক এক প্রদর্শনী, যেখানে এই ‘এন্ডপেপার’-এর শিল্পকলার বিবর্তন তুলে ধরা হয়েছে।
বইয়ের ভেতরের এই পাতাগুলো, যা হার্ডকভার বইয়ের কভারের সঙ্গে ভেতরের পৃষ্ঠাগুলোকে যুক্ত করে, একসময় নিছক নকশার স্থান ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, চিত্রকররা এই স্থানটিকে গল্পের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।
কোনো কোনো শিল্পী একে গল্পের শুরুতে প্রবেশদ্বার হিসেবে, আবার কেউ গল্পের শেষে একটি মন্তব্যের মতো করে উপস্থাপন করেন।
এই ‘এন্ডপেপার’-গুলো এখন গল্পের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে। অনেক শিল্পী একে গল্পের বিষয়বস্তু সম্পর্কে মন্তব্য করার বা কৌতুকপূর্ণ কিছু যোগ করার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন, যা অনেকটা ইস্টার ডিমের মতো।”
প্রদর্শনীর জন্য হ্যান্ডি বিভিন্ন সময়ের ৫০টিরও বেশি বই সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ১৮০৩ সালে প্রকাশিত ‘লাইফ অফ জিওফ্রে চসার’ থেকে শুরু করে ২০২০-এর দশকের অনেক বই রয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, কমেডিয়ান জেসুস ট্রেজোর লেখা ২০২৩ সালের বই ‘পাপাজ ম্যাজিক্যাল ওয়াটার-জু ক্লক’ এবং আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সর্বকনিষ্ঠ কবি আমান্ডা গোরম্যানের লেখা ‘সামথিং, সোমডে’ বইয়ের চিত্রকর্ম।
আশির দশকে প্রকাশিত এ. এ. মিলনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড অফ পুহ’ বইয়ের একটি সংস্করণে অ্যাশডাউন ফরেস্টের একটি মানচিত্র দেখা যায়। এই ধরনের কাজগুলো তখনো ‘এন্ডপেপার’-এর সৃজনশীল ব্যবহারের প্রাথমিক পর্যায় ছিল।
‘এন্ডপেপার’-এর এই বিবর্তন সম্পর্কে হ্যান্ডি বলেন, “কিছু শিল্পী মনে করেন, এটি বইয়ের অন্য অংশের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আবার কেউ কেউ একে বাড়তি কাজ হিসেবে দেখেন অথবা এর সৃজনশীল সম্ভাবনাকে সেভাবে মূল্যায়ন করেন না।”
‘ওপেন + শাট’ প্রদর্শনীটি এই শিল্পকলার প্রতি দর্শকদের আগ্রহ বাড়িয়েছে। প্রদর্শনীটি আগামী ৯ নভেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত চলবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান