সিমোন দ্য বোভোয়ারের ‘দ্য ইনসেপারেবলস’ অবলম্বনে নির্মিত নাটকের আলোচনা
বিখ্যাত ফরাসি দার্শনিক ও লেখিকা সিমোন দ্য বোভোয়ারের একটি অপ্রকাশিত উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে নতুন একটি নাটক। বোভোয়ারের বাল্যকালের বন্ধু এলিজাবেথ লাকোয়াঁর সঙ্গে তাঁর গভীর বন্ধুত্বের গল্প নিয়ে লেখা ‘দ্য ইনসেপারেবলস’ উপন্যাসটি ১৯৫৪ সালে লেখা হলেও, লেখকের মৃত্যুর অনেক পরে ২০২০ সালে প্রকাশিত হয়।
এই নাটকের আলোচনা নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন।
নাটকটিতে দেখা যায়, তরুণী সিলভি (অভিনয়ে আয়েশা অস্টলার) এবং আন্দ্রে (লারা মানেলা)। তাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সিলভি, আন্দ্রে-কে ছাড়া যেন বাঁচতে পারে না।
তাদের এই বন্ধুত্ব সমাজের নানা বাধা-বিপত্তি এবং ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে। একদিকে যেমন তাদের বন্ধুত্ব গভীর হয়, তেমনই আবার সমাজের নানা চাপ তাদের সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। আন্দ্রে-র মা’র চরিত্রে ক্যারোলিন ট্রোব্রিজ এবং ধর্মপ্রাণ ছাত্র পাস্কালের চরিত্রে আলেকজান্ডার কস্টের-বারমাডার অভিনয় দর্শককে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।
নাটকের গল্পটি মূলত দুটি মেয়ের বন্ধুত্বের ওপর কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। নাটকের প্রথম ভাগে তাদের বন্ধুত্বের গভীরতা এবং শৈশবের স্মৃতিগুলো তুলে ধরা হয়। দ্বিতীয় অংশে, তাদের কৈশোর এবং যৌবনে পদার্পণের পর সমাজের চাপ এবং ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে তাদের সম্পর্কের পরিবর্তন দেখা যায়।
এই পরিবর্তনের কারণে তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
সমালোচকরা মনে করেন, নাটকের চিত্রনাট্যে কিছু দুর্বলতা রয়েছে। বোভোয়ারের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসের নাট্যরূপ দেয়ার ক্ষেত্রে নাট্যকার গ্রেস জয়ে হাওয়ার্থ কিছু অংশে মনোযোগ দিতে পারেননি।
তবে, পরিচালক অ্যানাস্তাসিয়া বান্স-এর পরিচালনা এবং অভিনয়শিল্পীদের দক্ষ অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করে। বিশেষ করে আয়েশা অস্টলার-এর অভিনয় বোভোয়ারের চরিত্রটিকে নতুন রূপে উপস্থাপন করেছে।
নাটকটিতে বন্ধুত্বের গভীরতা, সমাজের চাপ এবং ব্যক্তির স্বাধীনতা—এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। এই ধরনের গল্প আমাদের সমাজে খুব প্রাসঙ্গিক।
বন্ধুদের প্রতি আমাদের যে আবেগ, সমাজের নানা বিধিনিষেধের সঙ্গে লড়াই করে নিজেদের পথ খুঁজে বের করার যে চেষ্টা, তা এই নাটকের প্রধান আকর্ষণ।
লন্ডনের ফিনবরো থিয়েটারে ১০ই মে পর্যন্ত নাটকটি প্রদর্শিত হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান