মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে, সংস্কার কাজের সময় পাওয়া গেছে উনিশ শতকের কিছু হাতে লেখা প্রেমপত্র। ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন মেইনের গোরহাম ক্যাম্পাসের অ্যাকাডেমি বিল্ডিংয়ে পাওয়া এই চিঠিগুলো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ইতিহাসবিদ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে।
ধারণা করা হচ্ছে, চিঠিগুলো সেই সময়ের যখন এই ভবনটি ছিলো একটি উচ্চ বিদ্যালয়, যেখানে ধনী পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করত।
ডিসেম্বর ২০২৪-এ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার কর্মীরা যখন দেয়াল এবং মেঝে মেরামত করছিলেন, তখনই চিঠিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
চিঠিগুলোতে তরুণ-তরুণীদের প্রেম, বিরহ এবং শিক্ষক সম্পর্কিত বিভিন্ন কথা লেখা ছিল। “আমার প্রিয়” -এর মতো শব্দগুলো বিশেষভাবে চোখে পড়ে।
ঐতিহাসিকরা মনে করছেন, এই চিঠিগুলো সম্ভবত উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে লেখা হয়েছিল। এই সময়ের শিক্ষার্থীদের আবেগ, চিন্তা এবং তখনকার সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে ধারণা পেতে এই চিঠিগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, অ্যাকাডেমি বিল্ডিংটি ১৮০৬ সালে নির্মিত হয়েছিল। শুরুতে এটি ছিলো একটি কলেজ-প্রস্তুতিমূলক বিদ্যালয়, যেখানে উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা আসত।
বিখ্যাত কবি হেনরি ওয়াডসওয়ার্থ লংফেলোর বাবা স্টিফেন লংফেলো এই বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য জমি সংগ্রহ করেছিলেন। ১৮৭৮ সালে এটি ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন মেইনের অন্তর্ভুক্ত হয়।
ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন মেইনের ইতিহাসবিদ ড. লিব্বি বিশফ বলেন, “এখানে ইতিহাস পড়ানোটা দারুণ, কারণ এই ভবনগুলো আমাদের ক্লাসরুম, এই পরিবেশ আমাদের ক্লাসরুম। অতীতের চিত্র কেমন ছিল, তা কল্পনা করার প্রয়োজন হয় না।
বর্তমানে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চিঠিগুলোকে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করছে। বিশেষ সংগ্রহ বিভাগের সমন্বয়কারী সুসি বক জানান, চিঠিগুলো ডিজিটাল করারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে সবাই এটি দেখতে পারে।
এর মাধ্যমে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিলগুলো সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে অতীতের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার একটি চিত্র তুলে ধরা যাবে।
সুসি বক আরও বলেন, “মানুষের জ্ঞান এবং আগ্রহ সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়, তবে মূল উৎসগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি। এর মাধ্যমে ইতিহাসের ভুল ধারণাগুলো দূর করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: পিপলস