শিরোনাম: বিশ্ব বাজারে কোকোর মূল্যবৃদ্ধি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চকলেটের দামে প্রভাব, বাংলাদেশের বাজারেও কি শঙ্কা?
চকলেট ভালোবাসেন এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও পছন্দের তালিকায় থাকে এই মিষ্টি খাদ্যটি।
কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে কোকোর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চকলেটের দাম বাড়ছে। এর প্রভাব যে শুধু আমেরিকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, তা নয়। বিশ্বায়নের যুগে এর ঢেউ লাগতে পারে বাংলাদেশেও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোকোর দাম বাড়ার প্রধান কারণ হলো সরবরাহ কমে যাওয়া। বিশ্বের মোট কোকো উৎপাদনের ৭০ শতাংশ আসে পশ্চিম আফ্রিকা থেকে।
কিন্তু গত বছর সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। এর ফলে কোকো চাষ ব্যাহত হয়, উৎপাদন কমে যায় এবং বাজারে সংকট তৈরি হয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কয়েক দশক ধরে কোকোর দাম প্রতি টনে প্রায় ২ হাজার মার্কিন ডলারের কাছাকাছি ছিল। কিন্তু বর্তমানে, কোকোর দাম বেড়ে প্রতি টনে ১২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
এই কারণে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ চকলেট প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। এমনকি, বিশ্বখ্যাত হার্শেসহ অন্যান্য কোম্পানি লাভের পরিমাণ কমাতে বাধ্য হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চকলেটের দাম বাড়ার পেছনে আরেকটি কারণ হলো দেশটির সরকার কর্তৃক বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির কারণে আমদানি করা অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে।
যেহেতু আমেরিকায় প্রয়োজনীয় কোকোর উৎপাদন হয় না, তাই তাদের আমদানি নির্ভর করতে হয়। ফলে, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে চকলেটের দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চকলেটের দাম বাড়লে ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। বাজারে হয়তো মানুষ বিকল্প খাদ্য খুঁজে নিতে পারে।
তবে, চকলেট যেহেতু অনেকের কাছে একটি বিশেষ পছন্দের খাবার, তাই এর চাহিদা খুব সহজে কমবে না।
তাহলে বাংলাদেশের বাজারে কি এর কোনো প্রভাব পড়বে?
বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে, বিশ্ব বাজারের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
কোকোর দাম বাড়লে, বাংলাদেশে আমদানি করা চকলেটের দামও বাড়তে পারে। এছাড়া, দেশে উৎপাদিত চকলেট সামগ্রীর দামের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে, কারণ উৎপাদনকারীরাও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে।
যদিও বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত সরাসরি এর প্রভাব তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখতে হবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের গতিপ্রকৃতির দিকে তাদের নজর রাখতে হচ্ছে। বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার এবং ব্যবসায়ীদের সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
ভোক্তাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো, যদি চকলেটের দাম বাড়ে, তবে তাদের পকেট থেকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হবে। তাই, এখন থেকেই সচেতন থাকা এবং বাজারের দিকে নজর রাখা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান