সমুদ্রের শান্ত গভীরতা আর বালকের সারল্য: ওল্ফগ্যাং টিলম্যান্সের ক্যামেরায় বন্দী এক মুহূর্ত।
শিল্প সবসময়ই মানুষের মনে গভীর রেখাপাত করে। জার্মান শিল্পী ওল্ফগ্যাং টিলম্যান্সের (Wolfgang Tillmans) ক্যামেরায় বন্দী ছবিগুলো যেন ঠিক তেমনই।
তাঁর তোলা একটি ছবি বর্তমানে ডেনমার্কের লুইজিয়ানা মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্টে প্রদর্শিত হচ্ছে। “লুইজিয়ানা” নামের এই ছবিটি আসলে সমুদ্রের কাছাকাছি কাটানো দুটি বালকের মুহূর্তের প্রতিচ্ছবি।
ছবিটিতে দেখা যায়, স্বচ্ছ নীল জলরাশির মাঝে দুটি ছেলে, যাদের শরীর সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে। তাদের সোনালী চুল, ফ্যাকাশে ত্বক আর টি-শার্টের দাগ বুঝিয়ে দেয়, তারা কিছুক্ষণ আগেই হয়তো জলকেলিতে মত্ত ছিল।
শান্ত সমুদ্রের উপরিভাগে তাদের প্রতিবিম্ব যেন এক অন্য জগৎ তৈরি করেছে। ছবিটি যেন গ্রীষ্মের এক উজ্জ্বল দিনের স্মৃতি, যেখানে সময় থমকে দাঁড়িয়েছে।
এই ছবিটি তোলার স্থানটি হলো ডেনমার্কের ওরেসুন্দ উপকূল, কোপেনহেগেনের উত্তরে অবস্থিত। এখানকার সমুদ্র প্রায়ই উত্তাল থাকে, কিন্তু টিলম্যান্সের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এক শান্ত, স্নিগ্ধ রূপ।
ছবিটি যেন সমুদ্রের গভীরতা আর বালকদের সারল্যের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। ছবিটির নির্মলতা ও রহস্যময়তা দর্শকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে।
সমুদ্রকে নিয়ে বিখ্যাত লেখক র্যাচেল কার্সন তাঁর ‘আন্ডারসি’ (Undersea) প্রবন্ধে লিখেছিলেন, সমুদ্র নিয়ে সত্য লিখতে গেলে কবিতা বাদ দেওয়া যায় না।
টিলম্যান্সের এই ছবিটাও যেন অনেকটা তেমনই। সমুদ্রের প্রতিচ্ছবি হয়ে এটি একইসাথে গভীর এবং বহুমাত্রিক।
লুইজিয়ানা মিউজিয়ামে বর্তমানে ‘ওশেন’ (Ocean) নামে একটি প্রদর্শনী চলছে, যেখানে সমুদ্র বিষয়ক বিভিন্ন শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে।
টিলম্যান্সের ছবিটিও সেই প্রদর্শনীর একটি অংশ।
এই ছবিটি দর্শকদের মনে সমুদ্রের বিশালতা, প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং শৈশবের স্মৃতিগুলো একসাথে জাগিয়ে তোলে। ছবিটির নির্মলতা ও গভীরতা শিল্পবোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক—সবার কাছেই বিশেষভাবে উপভোগ্য।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান